দেশে ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫১৪ ডোজ টিকার ঘাটতি রয়েছে

করোনা টিকা
করোনা টিকা  © ফাইল ছবি

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশে ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫১৪ ডোজ টিকার ঘাটতি রয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ অবস্থায় নির্দিষ্ট সময়ে টিকা না আসলে দেশে টিকা সংকট সৃষ্টি হবে বলেও জানানো হয়েছে। বুধবার (৫ মে) দুপুরে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। তখন থেকে গতকাল (৪ মে) পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৭৫৭ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩১ লাখ ৬ হাজার ৭০৯ জন। অর্থাৎ, দুই ডোজ মিলিয়ে মোট ৮৯ লাখ ২৬ হাজার ৪৬৬ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। টিকার বর্তমান মজুতের সঙ্গে হিসাব মিলিয়ে দেখা গেছে, ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫১৪ ডোজের সংকট রয়েছে।

রোবেদ আমিন বলেন, টিকা সংকটের কারণে গত ২৬ এপ্রিল থেকে প্রথম ডোজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে এখনও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া বাকি ২৭ লাখ ১৩ হাজার ৪৮ জন। দেশে এখন মজুত টিকা আছে ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৫৩৪ জনের। এ কারণে টিকার দ্বিতীয় ডোজের অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫১৪ জন।

তবে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরের আগেই চীন থেকে টিকা আসার সুযোগ আছে। আমরা আশা করছি সেটি দ্রুতগতিতেই আমাদের কাছে পৌঁছাবে। এ টিকা ছাড়াও রাশিয়ার যে স্পুটনিক টিকা বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে আলোচনা চলছে, সেটি দেশে আনতে ছাড়পত্র প্রয়োজন, যা বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অবস্থান করছে। আমরা আশা করছি দ্রুত গতিতেই ছাড়পত্র পেলে রাশিয়ার টিকা আনতে সক্ষম হবো।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বাংলাদেশের রেনেটা ফার্মাসিউটিক্যালস নামক একটি কোম্পানি মর্ডানার টিকা আনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে। এটি নিয়েও তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা বিদ্যমান আছে। এছাড়াও দেশে তিনটি ফার্মাসিটিক্যালস কোম্পানি ইতিমধ্যে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে তারা বাংলাদেশি টিকা উৎপাদন করতে চায়। তারা এটি নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের সক্ষমতাও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ইতোমধ্যে দেখা হয়েছে। এই তিনটি কোম্পানি সারাদেশে প্রায় এক বছরে দেড় কোটি ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।

দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা সংক্রমণের পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি। বিগত সাত দিনে পরিস্থিতি এখন আগের চেয়ে ভালো। একটা সময় ছিল যখন প্রতিদিন ছয় থেকে সাত হাজারের বেশি করোনা শনাক্ত হতো। কিন্ত গত সাত দিনে এখন শনাক্তের হার প্রায় ৮.৭১ থেকে চলে এসেছে। এভাবেই সংক্রমণ যেন নিচের দিকে চলে আসে এবং এটা যেন অব্যাহত থাকে, এজন্য আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। জনসাধারণকে চলাচল সীমিত করতে হবে। অবস্থা যদি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারি, তাহলে সংক্রমণের হার আবারও যেকোনো সময় বেড়ে যেতে পারে। এ জন্য কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি সবাইকে মানতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ