একজন থেকে করোনা আক্রান্ত হতে পারেন ৪০৬ জন
লকডাউন ও সামাজিক দূরত্বের মতো বিষয়গুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়িত না হলে একজন করোনা রোগীর কাছ থেকে ৩০ দিনে সংক্রমিত হতে পারে আরও ৪০৬ জন।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ-এর এক গবেষণার ভিত্তিতে সোমবার এমন তথ্য জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
দেশটির মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, কর্ণাটক, কেরল, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, গুজরাট ও তামিলনাড়ুতে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা লক্ষাধিক।
সোমবার বিকালের বুলেটিনে নীতি আয়োগের সদস্য ড. ভিকে পাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই করোনা আবহে দয়া করে অকারণে বাড়ি থেকে বের হবেন না। পরিবারের মাঝেও মাস্ক পরে থাকুন। মাস্ক পরা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিজের বাড়িতে অন্য কাউকে আমন্ত্রণ জানাবেন না।’সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার সংক্রমণের ঝুঁকি কমায় বলেও উল্লেখ করেন ড. ভিকে পাল।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনাভাইরাসে প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে টানা ষষ্ঠ দিন সেখানে তিন লাখেরও বেশি মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হলেন।
পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৪৩৫ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন। এসময়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৭৬৪ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ কোটি ৭৬ লাখ ২৫ হাজার ৭৩৫ জন। মোট মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৮০ জনের।
মঙ্গলবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভারতে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এপ্রিল হয়ে উঠেছে এযাবৎ সবচেয়ে প্রাণঘাতী মাস। এর মধ্যে গোটা মাসের অর্ধেক মৃত্যুই হয়েছে শেষ এক সপ্তাহে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, চলতি মাসে ভারতে অন্তত ৩৪ হাজার ৫৯৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে যোগ হয়েছেন ১৭ হাজার ৩৩৩ জন।
গত বছর কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কখনও এক লাখ পেরোয়নি। ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দৈনিক সংক্রমণ এক লাখ অতিক্রম করে। তার ১০ দিন পর, ১৫ এপ্রিল শনাক্ত ছাড়ায় দুই লাখের গণ্ডি। এর এক সপ্তাহের মাথায় এ সংখ্যা তিন লাখ ছাড়ায়, যা এরইমধ্যে সাড়ে তিন লাখ পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার পরিসর ক্রমেই কমে আসছে। অনেক ক্ষেত্রেই একই শয্যায় একাধিক রোগীকে শুয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। অক্সিজেনের অভাব সামাল দিতে মাঠে নেমেছে প্রশাসনও। অনেক জায়গাতেই অস্থায়ী কোভিড কেয়ার কেন্দ্র তৈরি করে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চালাচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যের সরকার।