না জেনে আইসোলেশন সেন্টারকে হাসপাতাল বলা হয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক  © ফাইল ছবি

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বসুন্ধরা ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মার্কেটে নির্মিত দুটি করোনা আইসোলেশন সেন্টার নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এ সম্পর্কে না জেনে একটি গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আইসোলেশন সেন্টার দুটিকে হাসপাতাল বলা হয়। রবিবার একটি জাতীয় দৈনিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেদনে একটি হাসপাতালকে বিলুপ্ত এবং একটি হাসপাতালকে বাদ রেখে পাশের ভবনে নতুন হাসপাতাল তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। যেটি পুরো মিথ্যা ও বানোয়াট।

বসুন্ধরা আইসোলেশন সেন্টারের তথ্য তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছর করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে বসুন্ধরা গ্রুপের আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার সংলগ্ন এলাকায় ২ হাজার ১৭ শয্যার এটি চালু করা হয়। এর মধ্যে ৫০টি আইসিইউ শয্যা ছিল। এখানে ১২০ জন চিকিৎসক, ১৬৬ জন নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ ৩৪৯ জনবলের পদায়ন করা হয়।

আইসোলেশন সেন্টারটি বন্ধ করার কারণ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার উপসর্গ আছে, এমন রোগীদের বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্য সেটি তৈরি করা হয়। ওইসব রোগীর জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিলে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য জনবল নিয়োগ করা হয়। হঠাৎ কোনো রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তার আইসিইউর প্রয়োজন হতে পারে- সে ভাবনা থেকে ৫০ শয্যার আইসিইউ ইউনিটও চালু করা হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল, সেখানে রোগী যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, এর মধ্যেই আবার সংক্রমণ কমতে শুরু করল। একে একে করোনা চিকিৎসায় যুক্ত হাসপাতালগুলোর কয়েকটি বাদ দিয়ে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসায় ফেরানো হলো। কিন্তু বসুন্ধরার ওই আইসোলেশন সেন্টারটি সাধারণ চিকিৎসায় ফেরানো সম্ভব নয়। কারণ ওই সেন্টারটিতে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হয়নি। চিকিৎসা দেওয়া না গেলে পদায়ন করা জনবলেরও অপচয় হবে। এর পর সার্বিকভাবে হাসপাতালটি নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকেও অবহিত করা হয়।

মহাখালীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আইসোলেশন সেন্টার সম্পর্কে তিনি বলেন, বসুন্ধরার মতো সেখানেও এক হাজার শয্যার একটি আইসোলেশন সেন্টার চালু করা হয়েছিল। পরে সেটি করোনা নমুনা সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এখন ওই এক হাজার শয্যার সঙ্গে সমন্বয় করে এটিকে ১ হাজার ৫০০ শয্যার কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তর করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, অথচ ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওইসব শয্যা বাদ রেখে অন্য একটি ভবনে নতুন করে হাসপাতাল তৈরির কাজ চলছে। এর পেছনে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির ইঙ্গিত করা হয়েছে। বিষয়টি দুঃখজনক।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অন্য ভবনে হাসপাতালটি তৈরি করা হচ্ছে না। আগের এক হাজার শয্যার আইসোলেশন সেন্টারের সঙ্গে সমন্বয় করে এক হাজার ৫০০ শয্যার কভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে। ১০০টি আইসিইউ শয্যা এবং ২০০ এইচডিইউ শয্যা থাকবে। করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় এটি হবে দেশের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল। সুতরাং বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত না জেনে গণমাধ্যমে এ বিষয়ে ভুল তথ্য সংবলিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ