দেশে এক সপ্তাহের ব্যবধানে মৃত্যু বেড়েছে ৪২%, শনাক্ত ৮৫%
এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বেড়েছে ৪২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর রোগী শনাক্ত বেড়েছে ৮৫ দশমিক ২৪ শতাংশ। সর্বশেষ শনিবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে আরো ৩৯ জন, যা চলতি বছরের মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু। এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর ৪০ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে তিন হাজার ৬৭৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরে দেশের রোগতাত্ত্বিক ১১তম সপ্তাহে (১৪-২০ মার্চ) নমুনা সংগ্রহ ছিল এক লাখ ৩৯ হাজার ৬৬৬টি। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েছে ১২ হাজার ৪৭০ জন। ওই এক সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জনের। সুস্থ হয়েছে ১০ হাজার ৪০৮ জন। পরের ১২তম সপ্তাহে (২১-২৭ মার্চ) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক লাখ ৭৮ হাজার ৬৮৩টি।
এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৩ হাজার ১০০ জন, মারা গেছে ২০১ জন ও সুস্থ হয়েছে ১৩ হাজার ২০৪ জন। অর্থাৎ এই এক সপ্তাহে পরীক্ষা বেড়েছে ২৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ, শনাক্ত বেড়েছে ৮৫ দশমিক ২৪ শতাংশ, মৃত্যু বেড়েছে ৪২ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং সুস্থতার হার বেড়েছে ২৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ। শনাক্ত বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ এবং সুস্থতা বৃদ্ধির হার সর্বনিম্ন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৩৯ জনের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারী, যাদের মধ্যে ৩৫ জনের বয়স ৫১ বছরের ওপরে (২৫ জন ষাটোর্ধ্ব), ৪১-৫০ বছরের একজন ও ৩১-৪০ বছরের তিনজন; যাঁদের ২৮ জন ঢাকা বিভাগের, পাঁচজন চট্টগ্রামের, দুজন রাজশাহীর, দুজন খুলনার, একজন করে সিলেট ও রংপুরের। সবার মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে।
পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে সামনে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ড. মুশতাক হোসেন।
তিনি বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, গত এক সপ্তাহে যারা মারা গেছেন, তাদের বেশির ভাগই আক্রান্ত হয়েছিলেন দুই-তিন সপ্তাহ আগে। তখন শনাক্ত কম ছিল। কিন্তু এখন যেভাবে দিনে সাড়ে তিন হাজারের বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, তাতে আগামী দুই-তিন সপ্তাহের মাথায় মৃতের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে। যদিও এর পরে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার ১৪ দিন পর থেকে আবার মৃত্যু কমে আসবে বলেই আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, যারাই এখন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে, তাদের জন্য সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে বাড়িতে অক্সিমিটার ব্যবহার। অক্সিজেন সেচুরেশন কমতে থাকলেই জরুরি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। হাসপাতালে যাওয়ার পর যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তবে হয়তো মৃত্যু কমিয়ে রাখা সম্ভব হবে। ফলে রোগী ও হাসপাতাল— উভয়ের সতর্ক ব্যবস্থাপনা এই সময়েই খুবই জরুরি।