করোনাকালে যেন শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার মিছিল শুরু হয়েছে: ভার্চুয়াল সেশনে বক্তারা

  © সংগৃহীত

করোনকালে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ২৭ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই রয়েছেন ১১ জন। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে একজন করে সমাজবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী, কাউন্সিলর ও থেরাপিস্ট নিয়োগ করা দরকার।

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে ‘আগামীর বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘করোনকালীন শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা: কারণ, প্রতিকার ও সচেতনতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেশনে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

সেশনে বক্তরা বলেন, করোনার মহামারী চলাকালে যেন আত্মহত্যার মিছিল শুরু হয়েছে। ঘরবন্দি থেকেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ শিক্ষার্থীর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে। যার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই ১১ জন রয়েছেন। শিক্ষার্থীর জন্য প্রতিষ্ঠানে একজন কাউন্সেলরকে একেবারেই অপ্রতুল বলে মনে করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।  

তারা আরও বলেন, আবার যেসব শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন, এর পেছনের কারণ কী, তা জানতে কর্তৃপক্ষের কোনও উদ্যোগ নেই। পরামর্শদান দফতরও এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য সংরক্ষণ করে না। নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবার ও সহপাঠীরা বলছেন বিষণ্ণতা, শিক্ষাজীবন নিয়ে হতাশা, সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে তারা আত্মহননের পথ বেছে নেন।

সেশনের আলোচক ঢাবি অধ্যাপক ড. খন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্ট্রেজ ম্যানেজমেন্টের জন্য রিস্ক এসেসমেন্ট এবং রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো নির্ধারণ করা উচিত। বিশেষত কোনও বয়সের শিক্ষার্থীরা ভালনারেবল সেটিও বিবেচনা করা প্রয়োজন। পাশাপাশি করোনাকালীন সময়ে শিক্ষকদের ভার্চুয়াল ক্লাসের পাশে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেওয়ার জন্য সংযুক্ত করা দরকার। তাছাড়া বিশ্বের উন্নত দেশের মতো প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন সমাজবিজ্ঞানী, একজন মনোবিজ্ঞানী, কাউন্সিলর ও থেরাপিস্ট থাকা দরকার।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার গোলাম কিবরিয়া শিমুল বলেন, শিক্ষার্থীদের স্ট্রেজ ম্যানেজমেন্ট ও রিস্ক ম্যানেজমেন্ট প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব প্রদান করা। করোনকালীন সময়ে পরীক্ষা মূল্যায়ন পদ্ধতির উপর গুরুত্ব প্রদান করেন। পাশাপাশি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে শিক্ষার্থীদের ভাতা ও উন্নত জীবন-যাপনের ওপর গুরুত্ব প্রদান করেন। তাছাড়াও আত্নহত্যার বিষয়ে আইনগত বিষয়ে সকলকে অবগত করেন।

আত্নহত্যা বিষয়ে ইসলামী বিধিবিধান নিয়ে আলোকপাত করেন ঢাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ সহকারী অধ্যাপক আমির হোসেন। 

ঢাবির ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের লেকচারার ফারজানা আক্তার লুনা আত্নহত্যার কারণ, প্রতিকার ও সচেতনা বৃদ্ধির বিষয়ে সেশনের মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন।

শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আবু জাফর আহমেদ মুকুল উপস্থাপনায় চেয়ার অফ সেশন হিসেবে ঢাকা ইমপিরিয়াল কলেজ ভাইস-প্রিন্সিপাল মো. দেলোয়ার হোসেন মৃধা সূচনা সংযুক্ত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ