করোনাভাইরাস: প্রতিরক্ষাসচিব ও ডা. মঈনের পরিবার প্রথম ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে
দেশে কোভিড-১৯ রোগীদের সেবায় নিয়োজিত থেকে যারা নিজেরাও আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এবার সে পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু করেছে সরকার। এদিক থেকে এই ক্ষতিপূরণের প্রথম পাচ্ছে প্রয়াত প্রতিরক্ষাসচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী এবং সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক মো. মঈন উদ্দিনের পরিবার।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গত সোমবার উভয় পরিবারের নামে ৫০ লাখ টাকা করে মোট ১ কোটি টাকা মঞ্জুরি দিতে দুটি আলাদা চিঠি পাঠিয়েছে অর্থ বিভাগেরই প্রধান হিসাব কর্মকর্তার কাছে। অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আবু ইউসুফ স্বাক্ষরিত উভয় চিঠিতে বলা হয়েছে, তাদের স্ত্রীদের কাছে ক্ষতিপূরণের চেক হস্তান্তর করবেন অর্থ বিভাগের ড্রইং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার (ডিডিও)।
চলতি বাজেটে ‘স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাবদ ক্ষতিপূরণের জন্য বিশেষ অনুদান’ খাতে যে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে, তা থেকে এ ব্যয় করা হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
কোভিড–১৯ আক্রান্ত রোগীদের সেবায় সরাসরি কর্মরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ মাঠ প্রশাসন, আইন–শৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্য কর্মচারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে গত ২৩ এপ্রিল অর্থ বিভাগ যে পরিপত্র জারি করে।
এতে বলা হয়, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি চাকরিজীবী যাঁরা নিজেরা আক্রান্ত হবেন বা মারা যাবেন, তাদের জন্য গ্রেড অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এর পরিমাণ ৫ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ ১৫ থেকে ২০তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ৫ লাখ টাকা ও মারা গেলে ২৫ লাখ টাকা, ১০ থেকে ১৪তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও মারা গেলে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ১ থেকে নবম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ১০ লাখ টাকা এবং মারা গেলে ৫০ লাখ টাকা পাবেন। আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী প্রথম গ্রেড ও মঈন উদ্দিন পঞ্চম গ্রেডের সরকারি কর্মচারী ছিলেন।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক মঈন উদ্দীন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান গত ১৫ এপ্রিল। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি কোভিদ-১৯ আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে চৌধুরী রিফাত জাহানের আবেদনপত্রে সুপারিশ করেন এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মো.মইনুল হক।
এদিকে প্রয়াত সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী মারা যান গত ২৯ জুন। মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। চিকিৎসা নিচ্ছিলেন বাসায়। পরে তাকে সিএমএইচে নেওয়া হয়। সেখানে তার করোনা শনাক্ত হয়। দুই সপ্তাহ ধরে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকার পর মারা যান। ক্ষতিপূরণ নেওয়ার চিঠি পাঠানো হয়েছে তার স্ত্রী গুল সাকিনা পারভীনকে।