৭ লাখ টাকা বিল করে ‘উলঙ্গ মরদেহ’ ফেরত দিল আনোয়ার খান মডার্ন
- টিডিসি নিউজ
- প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২০, ০৯:২৩ AM , আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২০, ০৯:২৩ AM
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত এক ব্যক্তিকে দাফনের জন্য উলঙ্গ অবস্থায় হস্তান্তর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হসপিটালের বিরুদ্ধে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে হস্তান্তরের সময় মৃতদেহের জন্য চাদর দিতে অনুরোধ করে স্বেচ্ছাসেবকরা। তবে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানিয়ে দেন, ‘এটি সিস্টেমে নেই’।
অথচ করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর আছে। সে মোতাবেক মৃত মুসলমান ব্যক্তির মরদেহ কাপড়হীনভাবে দাফন করা যাবে না। জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮৭ বছর বয়সী মোখলেস উদ্দিন আহমেদ গত ১৭ জুলাই ভর্তি হন আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (২৫ জুলাই) মারা যান তিনি।
মৃত ব্যক্তির পরিবার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে মরদেহ দাফনের জন্য দায়িত্ব দেন। তারা তার মৃতদেহ গ্রহণ করতে গেলে তাকে উলঙ্গ অবস্থায় দেথতে পান। স্বেচ্ছাসেবীরা তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেন, ‘সাত লাখ টাকা বিল নিলেন, অথচ একটি চাদর দেওয়া যাবে না?’ জবাবে কর্মকর্তারা জানান, ‘এটি তাদের সিস্টেমে নেই।’
পরে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে পুরাতন ছেড়া চাদর দেওয়া হয়। একজন স্বেচ্ছাসবক বলেন, ‘যখন মরদেহ গ্রহণ করতে যাই, তখন দেখলাম উলঙ্গ অবস্থায় কাছে দিয়েছে। উল্টো আমরা বডিব্যাগ না নিয়ে যাওয়ায় দোষারোপ করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সিস্টেম ও নিয়ম-কানুন বলার চেষ্টা করেন। অনেক অনুরোধের প্রায় ৩০ মিনিট পর চাদর দেন তারা।’
তিনি জানান, ‘চাদরটি দিয়ে লাশ ঢেকে বডিব্যাগে ভরে লাশ আগে গোসল করাতে নিয়ে যাই। তারপর মানিকগঞ্জে লাশ দাফন করি।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর মোতাবেক, মুসলমান ব্যক্তির মৃতদেহ ব্যাগে ভরে কাপড়হীনভাবে দাফন করা যাবে না। করোনায় হাসপাতালে মারা গেলে সঙ্গে সঙ্গে মৃতদেহ প্লাস্টিকের কাভার দিয়ে মুড়িয়ে রোগী যে বিছানায় ছিল তাও নির্দিষ্ট স্থানে সরিয়ে ফেলতে হবে।
মৃতদেহের ব্যবস্থা প্রক্রিয়ায় বলা আছে– মৃতদেহ সৎকারে দেহের সকল ছিদ্রপথ তুলা দিয়ে বন্ধ করতে হবে। মৃত্যুর স্থানেই মরদেহ প্লাস্টিকের কভার দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে হবে। মুসলমানদের জন্য সাদা ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে।
এদিকে হাসপাতাল থেকে বডিব্যাগে লাশ হস্তান্তরের নিয়ম আছে বলে দাবি করেছেন হাসপাতালের পরিচালক (উন্নয়ন) ডা. মো. এনায়েত হোসেন শেখ। তিনি বলেন, ‘এখানে হয়তো মিস্টেক হয়েছে, এমন হওয়ার কথা না। হাসপাতাল থেকে বডিব্যাগে লাশ হস্তান্তর করার কথা। আমি অবশ্যই বিষয়টা দেখবো।’