রোগীর স্বজনদের হামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. রকীবের মৃত্যু
খুলনার গল্লামারী এলাকার রাইসা ক্লিনিকের মালিক ডা. আব্দুর রকীব খানকে (৫৯) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এক রোগী মৃত্যুর ঘটনায় স্বজনেরা তাকে মারধর করেন বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার (১৬ জুন) সন্ধ্যায় খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ডা. আব্দুর রকীব খান বাগেরহাট সরকারি মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলের (ম্যাটস) অধ্যক্ষ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক বলে জানা গেছে। নিহতের ছোট ভাই মো. সাইফুল ইসলাম খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, রোববার মুহাম্মদ নগরের সন্তান-সম্ভবা ওই নারীকে ক্লিনিকে ভর্তি করেন স্বজনরা। তার কিছু জটিলতা থাকায় সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করানো হয়। প্রথমে বাচ্চা ও মা দু’ইজনই ভালো ছিলেন। তবে রাতে মায়ের অবস্থার অবনতি ঘটে। সকালে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করতে বলা হয়।
তিনি জানান, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। দুপুরের দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান। এরপর রাত ৯টার স্বজনরা মরদেহ নিয়ে ক্লিনিকের সামনে গিয়ে ডা. রকীব খানকে মারধর করেন। এসময় ভারি কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়।
মারধরের পর ডা. রকীব খানের অবস্থা গুরুতর হলে রাতেই গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে দুপুরে শেখ আবু নাসের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় মামলা করা হবে বলে জানান সাইফুল ইসলাম খান।
বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের খুলনা শাখার সভাপতি গাজী মিজানুর রহমান বলেন, ‘ডা. রকীব খান জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক। করোনাকালে সবাই প্রাইভেট ক্লিনিক বন্ধ রাখলেও তিনি চালু রেখে মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন। কিন্তু তাকেই মার খেয়ে মারা যেতে হলো। এর চেয়ে দুঃখজনক কিছু হতে পারে না।’
ডা. রকীব খানের মৃত্যুতে প্রতিবাদ জানিয়েছে ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সসিবিলিটি (এফডিএসআর)। ওই সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ডা. রাহাত আনোয়ার চৌধুরী বলেন, ‘চিকিৎসা অবহেলার অভিযোগে ব্যবস্থা না নিয়ে এবং মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলে অভিযোগ না করে এভাবে হামলা করে চিকিৎসককে হত্যা মেনে নেওয়া যায় না।’ এসময় হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।