কেন কোয়ারেন্টিনে ডা. ফেরদৌস— জানাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসক
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা ডা. ফেরদৌস খন্দকারকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর কারণ জানালেন বিমানবন্দরে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক চিকিৎসক। তিনি বলছেন, ডা. ফেরদৌসের করোনা নেগেটিভ সনদ থাকলেও অ্যান্টিবডি টেস্ট পজিটিভ। ফলে তার করোনা হয়েছিল এটি বোঝা যায়। বর্তমানে তার শরীরে ভাইরাস এখনো ‘অ্যাক্টিভ’ আছে কি-না তা নিশ্চিত হওয়া জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রেখেছে ব্র্যাক ট্রেনিং সেন্টারের একটি কক্ষে। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানোর পর, ডা ফেরদৌস খন্দকারের পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নানা ধরণের আলোচনা চলছে এখন। তবে তিনি দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে, সেগুলোকে তিনি মিথ্যা বলে দাবি করেন।
রোববার তিনি কাতার এয়ারওয়েজের একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরার পর এয়ারপোর্ট থেকেই তাকে আনুষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। বিতর্কের মূল কারণ হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা ওই বিশেষ ফ্লাইটে মোট ১২৯ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের ১২৮ জনকেই হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। একমাত্র ওই চিকিৎসক ফেরদৌস খন্দকারকেই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।
এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন সহকারী পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ। তিনি বলেছেন, “ডা. ফেরদৌস খন্দকারের করোনা নেগেটিভ সনদ রয়েছে, কিন্তু তার অ্যান্টিবডি টেস্ট পজিটিভ। ফলে তার করোনা হয়েছিল এটি বোঝা যায়। এখন সেটা ‘রিকভারি’ হয়েছে, না-তার শরীরে ভাইরাস এখনো ‘অ্যাক্টিভ’ আছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায় না। সেজন্যই তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।”
“অ্যান্টিবডি টেস্ট পজিটিভ হবার পরের টেস্টটি নেগেটিভ না আসলে বোঝা যায় না, ওই ব্যক্তি করোনা-মুক্ত হয়েছেন কি না। উনার ভাইরাস থাকতেও পারে, নাও থাকতে পারে। কিন্তু এয়ারপোর্টে তো স্বল্প সময়ের মধ্যে আমি সেটা নিশ্চিত হতে পারবো না।”
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে বিমানবন্দরে স্ক্যানিংয়ের কাজ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের মনিটরিং করে কখনো প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন আর কখনো হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হবার পর থেকে নিয়ম হচ্ছে, “করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট থাকলে বিদেশ থেকে আসা সকল যাত্রীকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠাতে হবে। বিদেশ থেকে আসা সব যাত্রীকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিনে যেতে হবে।”
ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ আরও বলেন, “কোন যাত্রীর যদি ‘আরটি-পিসিআর’ রিপোর্ট নেগেটিভ না থাকে, অথবা তার শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি থাকে, তাহলে তাকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হবে। আর কারো শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রির ওপরে থাকলে তাকে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল অথবা কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়।”