করোনাকে ভয় না পাওয়া সেই জনপ্রতিনিধি এবার সপরিবারে আক্রান্ত
জনপ্রতিনিধি হয়ে কাজ করতেন তিনি। করোনাকালীন দেশের এই সংকটময় মুহূর্তে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ থেকে শুরু করে মারা যাওয়া ব্যক্তির লাশ পর্যন্ত দাফন করতেন। এবার সেই ব্যক্তির মা-বাবাসহ তার পরিবারের ছয়জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে খাবার নিয়ে তাঁদের দেখতে যান নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক।
ইউএনও নাহিদা বারিক বলেন, করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই সে মানুষের জন্য কাজ করে আসছেন। তাঁর মা-বাবা, স্ত্রী, ছেলে, ভাই ও বোন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। পরিবারটির সদস্যদের মনোবল বাড়াতে তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। তাঁদের সান্ত্বনা দিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তাঁদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে।
এলাকার কয়েকজন জানান, ওই জনপ্রতিনিধি মানুষের বাড়ি বাড়ি সরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক বিতরণ করেছেন। এলাকায় জীবাণুনাশক মেশানো পানি পৌঁছে দিয়েছেন, ছিটিয়েছেন। যেখানে করোনায় মৃত ব্যক্তির স্বজনও লাশ ধরেন না, সেখানে তিনি সেই লাশ কবরস্থানে নিয়ে দাফন করেছেন। তাঁর পরিবারই এখন করোনায় সংক্রমিত। করোনাকালে তাঁর কাজ প্রশংসনীয়। আশা করা যায়, তাঁর পরিবারের সদস্যরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।
ওই ইউপি সদস্য বলেন, সম্প্রতি করোনা পরীক্ষার জন্য তিনি, তাঁর বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে, বোন, ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীসহ আটজন নমুনা দেন। পরীক্ষায় মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী ও ছেলেসহ ছয়জনের করোনা ‘পজিটিভ’ আসে। শুধু তিনি ও তাঁর বড় ভাইয়ের স্ত্রীর ‘নেগেটিভ’ আসে।’ তিনি বলেন, তাঁর মা ও বোনের অবস্থা বেশি ভালো নয়। তিনি তাঁদের সেবাযত্ন করছেন। ইউএনও এসে সবাইকে সাহস জুগিয়েছেন। তাঁর পরিবারের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। ঈদের দিনের রান্না করা খাবার দিয়ে গেছেন।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ওই জনপ্রতিনিধির পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে আইসোলেশনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে তাঁর মাকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।