গণস্বাস্থ্য মেডিকেল চিকিৎসকদের ১ দিনের বেতন কাটল কর্তৃপক্ষ
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিনিয়ত করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীনভাবে দিনাতিপাত করা মানুষের বিভিন্নভাবে সাহায্য করছে। খেটে খাওয়া এসব মানুষদের সাহায্য করার লক্ষ্যে এবার গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের শিক্ষক, কর্মকতা-কর্মচারী এবং চিকিৎসকদের একদিনের বেতন কেটে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের চলমান ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে তারা একদিনের বেতন প্রদান করেছেন বলে জানানো হয়েছে। বিষয়টি প্রশংসনীয় হলেও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, জুনিয়র মেডিকেল অফিসার ও মেডিকেল অফিসাররা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক জানান, ‘এপ্রিল মাসের বেতন আমাদেরকে মে মাসের ১৮ তারিখে দেওয়া হয়েছে। প্রতিমাসে সময়মতো কোনো চিকিৎসকের বেতন পরিশোধ করে না গণস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। বেতন তুলতে গিয়ে দেখি সবার একদিনের বেতন কেটে নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতেও নিজেদের জীবন ঝুঁকিতে রেখে আমরা প্রতিদিন ডিউটি করে যাচ্ছি। হাসপাতালে আগত প্রত্যেক রোগীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসকদের রমজান বা ঈদ উপলক্ষ্যে কোনো প্রণোদনার চিন্তা না করেই কর্তৃপক্ষ নিজের ইচ্ছায় আমাদের বেতন কেটে রেখেছে। আমাদের হাতে বেতনের সম্পূর্ণ টাকা তুলে দিয়ে ত্রাণের জন্যে সহযোগিতা চাইলে আমরা মন খুলে আরও বেশি সহযোগিতা করতাম।’
ওই চিকিৎসক আরো বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির প্রথম থেকেই আমরা চিকিৎসকরা নিজেদের অর্থায়নে ত্রাণ বিতরণ করে যাচ্ছি।’ আগে অবহিত না করেই প্রতিষ্ঠানের এমন সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারছেন না কেউই বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ফরিদা আদিব খানম বলেন, ‘চিকিৎসকদের অভিযোগ করার কিছু নেই। যদিও আগে থেকে তারা জানতেন না। কিন্তু আমরা পরে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই টাকা করোনা তহবিলের জন্য গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে দেয়া হবে।’
এদিকে প্রতিষ্ঠানের এমন সিদ্ধান্তে বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগীয় প্রধান ডা: শাকিল মাহমুদ বলেন, ‘আমার মতে, অত্যন্ত সুন্দর কাজ করা হয়েছে। এ সময়টাতে সবার সবাইকে সাহায্য করা উচিত। যে টাকা কাটা হয়েছে, সেটা কমই হয়েছে। আরো বেশি টাকা কর্তন করলেও আমি অখুশি হতাম না। এই রমজানে এক কাজে দ্বিগুণ সওয়ারের ভাগীদার হতে পারবো।’
চিকিৎসক সূত্রে জানা যায়, পূর্বেও ছবি প্রতিযোগিতার কথা বলে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন কর্তন করা হয়েছিলো। কিন্তু প্রতিবাদের মুখে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।