করোনার ওষুধ রেমডেসিভির দেশে প্রথম উৎপাদন করল এসকেএফ
করোনাভাইরাস চিকিৎসায় কার্যকর ওষুধ রেমডেসিভির দেশে প্রথমবারের মতো উৎপাদন করেছে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস। আজ শুক্রবার (৮ মে) সব প্রক্রিয়া শেষ করার পর শুরু হয়েছে বাজারজাত করার প্রস্তুতি।
করোনার চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান গিলিয়েড সায়েন্সেস কোম্পানির তৈরি ওষুধটি সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। দেশটির ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) গত সপ্তাহে করোনার ওষুধ হিসেবে এটিকে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। জাপানের ওষুধ প্রশাসনও ৭ মে ওষুধটি করোনার রোগীদের ওপর প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে।
তবে কবে নাগাদ জাপান উৎপাদনে যাবে, তা ঠিক হয়নি বলে সে দেশের একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন। গিলিয়েড সায়েন্সেস ওষুধটি উৎপাদনে ভারত ও পাকিস্তানের বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এ অবস্থায় এসকেএফই সারা বিশ্বে প্রথম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান, যারা জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদন করতে সক্ষম হলো। এসকেএফ রেমডেসিভিরের বাণিজ্যিক নাম ‘রেমিভির’।
এসকেএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিমিন হোসেন বলেন, ‘করোনা নিয়ে দেশের ক্রান্তিলগ্নে আমরা সুখবর দিতে চাই, বিশ্বে করোনার একমাত্র কার্যকর ওষুধ জেনেরিক রেমডেসিভির উৎপাদনের সব ধাপ সম্পন্ন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘গত মার্চে ওষুধ প্রশাসন ওষুধটি ব্যবহারের অনুমতি দেয়। অনুমোদনের পরপরই আমাদের ফর্মুলেশন বিজ্ঞানীরা রেমডেসিভির নিয়ে কাজ শুরু করেন। যেহেতু এটি শিরায় দেওয়া ইনজেকশন, সে কারণে উৎপাদনে সূক্ষ্ম প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়।’
তিনি জানান, দুই মাস ধরে কর্মীদের নিরলস পরিশ্রমে এত কম সময়ে ওষুধটি উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। এর মূল উপাদান সরবরাহকারীদের সঙ্গে চুক্তি করে কাঁচামালের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করেছি আমরা।’
কোভিড-১৯ চিকিৎসায়এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে রেমডেসিভির। গিলিয়েডের পরীক্ষায় দেখা গেছে, এর ব্যবহারে রোগীদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। রোগের তীব্রতার ওপর এর ডোজ নির্ভর করে। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের জন্য পাঁচ অথবা ১০ দিনের ডোজ প্রয়োজন। বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানীগুলোর উৎপাদিক রেমডেসিভির প্রতি ডোজের দাম হতে পারে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা।
রেমডেসিভির উৎপাদনের গিলিয়েডের স্বত্ব রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, জাতিসংঘ স্বীকৃত বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলো পেটেন্ট বা স্বত্ব অগ্রাহ্য করতে পারে। ফলে তারা সহনীয় মূল্যে ওষুধ উৎপাদন করতে পারে। তবে ওষুধটি খোলা বাজারে দেওয়া হবে না। এটা দেওয়া হবে সরকার অনুমোদিত হাসপাতালে।