করোনায় মৃত্যু ঘোষণার পর বৃদ্ধের রিপোর্ট নেগেটিভ
রাজশাহীতে করোনা আইসোলেশন ইউনিটে গত রবিবার (২৬ এপ্রিল) আবদুস সোবহান নামে এক বৃদ্ধ মারা যান। প্রথম দফা নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা ‘পজিটিভ’ এসেছিল। তবে সন্দেহ থেকে দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষার জন্য মৃত্যুর আগের দিন তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই পরীক্ষার প্রতিবেদন ‘নেগেটিভ’ এসেছে। বৃহস্পতিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) অধ্যক্ষ নওশাদ আলী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওই ব্যক্তির ফুসফুসে পানি ও বাতাস জমায় চিকিৎসকেরা তাকে বাঁচাতে পারেননি বলে জানান তিনি।
৮০ বছর বয়সী আবদুস সোবহানের বাড়ি বাঘা উপজেলায়। তাকেই রাজশাহীতে করোনায় মৃত প্রথম ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। নিশ্চিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহীতে আর কারও মৃত্যু হয়নি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১৯ এপ্রিল ওই বৃদ্ধ জ্বর ও প্রস্রাবের যন্ত্রণা নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। এক্সরে করার পর চিকিৎসকেরা সন্দেহ করেন, তিনি করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন। চিকিৎসকরা তার নমুনা পরীক্ষা করান। পরীক্ষার প্রতিবেদন ‘পজিটিভ’ আসে। তারপর থেকে তাকে হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়। কিন্তু এর আগেই অনেক চিকিৎসক ও নার্স ওই বৃদ্ধের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এমন ৪২ জন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
এছাড়া ওই রোগীর সঙ্গে থাকা তার স্ত্রী ও সন্তানেরও নমুনা পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু পরীক্ষায় একটি প্রতিবেদনও ‘পজিটিভ’ আসেনি। ফলে চিকিৎসকরা ওই রোগীর দ্বিতীয় দফায় নমুনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন। গত শনিবার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরের দিন সেই নমুনা পরীক্ষার আগেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে রাজশাহী বিভাগীয় করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা কমিটির সিদ্ধান্ত, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত সবাইকে নগরীর ভিতরে নির্ধারিত জায়গায় দাফন করা হবে। তাই ওই বৃদ্ধের লাশ বাঘা উপজেলার গ্রামের বাড়িতে নিতে দেওয়া হয়নি। অবশ্য স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে নির্ধারিত কবরস্থানেও লাশ দাফন করা যায়নি। শেষ পর্যন্ত নগরীর হেতেমখাঁ কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে।
রামেক অধ্যক্ষ নওশাদ আলী বলেন, দ্বিতীয় পরীক্ষায় ওই ব্যক্তির প্রতিবেদন করোনা ‘নেগেটিভ’ এসেছে। তিনি আসলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। তার ফুসফুসে পানি ও বাতাস জমেছিল। এ কারণেই তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।