করোনায় বিল গেটসের ১৪ শিক্ষা: দামি গাড়ি বাড়ি রিসোর্ট জীবনের জন্য নয়
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২০, ০৮:২৭ AM , আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২০, ১০:২৯ AM
করোনাভাইরাসের এই দুঃসময়ে বিল গেটস ১৪টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি সংস্কৃতি, ধর্ম, পেশা, আর্থিক অবস্থা থেকে শুরু করে পৃথিবীর সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেছেন। তিনি তার আলোচনায় বুঝিয়ে দিয়েছেন কিভাবে করোনাভাইরাস আমাদের বিভিন্ন বিষয় ইঙ্গিত দিয়ে শিখিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবেরের একান্ত অনুভবগুলো-
বিল গেটসের মতে, সংস্কৃতি, ধর্ম, পেশা, আর্থিক অবস্থা, খ্যাতি ইত্যাদির পরো আমরা সবাই সমান। ভাইরাস এই বিষয়টি আমাদের খুব ভালো করেই বুঝিয়েছে। যদি আপনি বিশ্বাস না করেন, তবে টম হ্যাঙ্কসকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
তার মতে, করোনা আমাদের দেখিয়েছে যে, আমারা সবাই একে অপরের সঙ্গে দারুণভাবে সম্পৃক্ত। জগতের সব কিছুই একটি বন্ধনে আবদ্ধ। সীমান্তরেখাগুলো আসলেই মিথ্যা।
বিল গেটসের মতে, এগুলোর মূল্য কতো কম তা করোনাভাইরাস বুঝিয়ে দিয়েছে। আপনারা ভালো করেই দেখেছেন, সীমান্ত পাড়ি দিতে ভাইরাসের ভিসা, পাসপোর্ট কিছুরই প্রয়োজন হয় না।
তিনি বলেন, স্বল্প সময়ের জন্য ঘরে আবদ্ধ থাকাটা হয়তো আপনার কাছে নিপীড়ন মনে হচ্ছে। তাহলে একটু ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করুন- যারা সারা জীবন ধরে এমন নিপীড়নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে- তাদের জীবনটা কেমন?
তিনি জানান, নিজের স্বাস্থ্যের মূল্য কতোটা তা করোনাভাইরাস বুঝিয়ে দিয়েছে। অথচ বিষয়টিকে আমরা কতো অবহেলা করি। নানা রকমের কেমিক্যালযুক্ত খাদ্য না খেলে আমাদের চলে না। আমরা যদি আমাদের শরীরের যত্ন না নেই। তবে অবশ্যই আমরা অসুস্থ হবো।
বিশ্বের এই সেরা ধনকুবেরের মতে, এই মারণ ভাইরাস আসলে বুঝিয়ে দিয়েছে, জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত। যেকোনো সময় জীবনের ইতি টানতে হতে পারে। এই সংক্ষিপ্ত জীবনের উদ্দেশ্য হচ্ছে বয়স্ক আর শিশুদের বেশি করে যত্ন নেওয়া। জীবন বাঁচাতে টয়লেট পেপার কিনে ঘর ভর্তি করাটাই জীবনের উদ্দেশ্য নয়।
তার মতে, ভাইরাস স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে, আমরা কতো স্বার্থপর। জড়বাদে বিশ্বাসী, ভোগবাদি আর বিলাসের সমাজই আমরা তৈরি করেছি। সঙ্কটময় মুহূর্তে বোঝা যায়- জীবনের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো হচ্ছে, খাদ্য, পানি আর ওষুধ। দামি বাড়ি, গাড়ি আর পাঁচ তারকা রিসোর্ট নয়।
বিল গেটসের মতে, এই মারণ ভাইরাস করোনা দেখিয়ে দিয়েছে নিজের পরিবার আর আপন জনকে আমরা কতোটুকু অবহেলা করি। আমরা যখন নিজ থেকে ঘরে ফিরিনি, আপনজনদের সময় দেইনি; ভাইরাস জোর করেই আমাদের প্রিয়জনদের কাছে ফেরাল। প্রিয়জনদের সঙ্গে নতুন করে দৃঢ় সম্পর্ক তৈরি করার সুযোগ তৈরি করে দিল।
আমাদের আসল কাজ শুধু চাকুরি করাই নয়। আমরা যা করি তার জন্যই আমাদেরকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়নি। আমাদের সৃষ্টির আসল কাজ হলো মানুষ মানুষের পাশে থাকা, পাশের মানুষকে রক্ষা করা। এমনটা মনে করেন বিশ্বের এই সেরা ধনকুবের।
এই ধনকুবেরের মতে, করোনা আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছে যে, এই পৃথিবী অসুস্থ। বাজার থেকে টয়েলেট রোল শেষ হয়ে যাচ্ছে এটি যেমন আমাদের মনে থাকে; ঠিক সেভাবে প্রয়োজনীয় বনাঞ্চল যে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সেই দিকেও নজর দিতে হবে। আমাদের পৃথিবী অসুস্থ থাকায় আমরাও অসুস্থ।
তার মতে, করোনাভাইরাস মনে করায় য়ে, কঠিন সময়ের পরেই আসে সুন্দর সময়। জীবন একটা চক্রের মতো। এটি আপন মনে ঘুরবে। করোনা এই দুঃসময়টি হলো ওই চক্রের একটি পর্ব। আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই; এই পর্বও চলে যাবে।