গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের করোনা পরীক্ষার কিট গ্রহণ করেনি সরকার

  © ফাইল ফটো

বাংলাদেশে করোনার ব্যাপক প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় যত দ্রুত সময়ে যত বেশি করোনা রোগী শনাক্ত করা সম্ভব ততই ভালো। আর এর জন্য প্রয়োজন শনাক্তকরণ কিট। সুলভ মূল্যে এবং খুব দ্রুত সময়ে করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব এমন কিট তৈরীর মধ্য দিয়ে আশার আলো দেখিয়েছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পূর্ব ঘোষিত কিট হস্তান্তর প্রোগ্রামে অনুপস্থিত থাকার পর এবার নিজে থেকে পৌঁছে দেওয়ার পরও কিট গ্রহণ করেনি তাঁরা। আজ রোববার (২৬ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে কিট গ্রহণ না করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের এত বড় একটা জাতীয় দুর্যোগেও কিছু সরকারী আমলা জনস্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তারা এমন দুর্যোগময় পরিস্থিতিতেও জনগণের স্বার্থের কোন গুরুত্ব না দিয়ে নিজের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। আমাদের তৈরিকৃত কিটে নিজেদের কোনো স্বার্থ নেই, জনস্বাস্থ্যের জন্য তৈরী করেছি। জনগণ ঠিকই আমাদের কিট গ্রহণ করার পক্ষে, অথচ সরকারি আমলাদের আমরা বুঝাতে পারছি না।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, সরকারের এই ঔষধ প্রশাসন, এই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কিট গ্রহণ না করতে বিভিন্ন রকমের নিয়মের দোহাই দিচ্ছে। প্রথমে চুক্তিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে যেতে বলেছে। সেখানে পয়সা দিতে হবে। খরচের কথা বলতে গেলে বলে, বাজেট দেবে কিন্তু এই বাজেট কবে দেবে তার কোনো হিসাব নেই। আপনারা তাহলে বুঝেন, এদের ব্যবসায়িক আগ্রাসন কত ভয়াবহ।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, গতকালের কিট হস্তান্তর প্রোগ্রামে আপনারা আসেননি। তারপরও আমরা বলেছি, কিট আপনাদের কাছে পৌঁছে দেব। জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সেটাও করেছি। কিন্তু অনুমোদন করার দায়িত্ব যে ঔষধ প্রশাসনের, সে ঔষধ প্রশাসন আমাদের কিট গ্রহণই করলো না। আমাদের দুর্ভাগ্য তাদের যারা নিয়ন্ত্রণ করছে তারা না ফার্মাসিস্ট, না ফার্মাকোলজিস্ট। তার ফলে এই জিনিসগুলোর গুরুত্ব সেভাবে তারা উপলব্ধি করতেই সক্ষম হচ্ছেন না। তারা সম্পূর্ণ ব্যবসায়ী স্বার্থ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আজকে আমাদের গণস্বাস্থ্যের ড. বিজন কুমার শীলসহ তিনজন গেলেন। তারপরও দেখেন, কেমন আমলাতান্ত্রিকতা। দুজনকে ঢুকতে দেবে, আরেকজনকে দেবে না। অথচ বাইরের তিনজন লোককে ভেতরে বসিয়ে রেখেছেন। তাদের ব্যবসা সংশ্লিষ্ট লোকদের ভেতরে বসিয়ে রেখেছেন। আমরা জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যাবসা করি না। গত ৪৮ বছরে কাউকে ঘুষ দিইনি, আর ভবিষ্যতেও দেব না।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বীর উত্তম মেজর জেনারেল এ টি এম হায়দায় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভাইস প্রিন্সিপাল ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের প্রধান এবং কিট উদ্ভাবক দলের প্রধান ড. বিজন কুমার শীল, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ও কিট উদ্ভাবন দলের সহকারী ডা. ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ।


সর্বশেষ সংবাদ