২৪ এপ্রিল ২০২০, ১৪:৫৩

করোনার প্রথম ওষুধ ব্যর্থ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যে তীব্র চাঞ্চল্য

গোটা বিশ্ব আজ করোনাভাইরাসে অস্থির। এর মধ্যেই আবিষ্কার হলো ওষুধ। শুরু হয়েছে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগও। একই পরীক্ষা শুরু করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। কিন্তু সেই ওষুধ ব্যর্থ হয়েছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর ওয়েবসাইটে তথ্য প্রকাশ হওয়ায় তীব্র চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। পরে অবশ্য হু-র ওয়েবসাইট থেকে ওই তথ্য তুলে নেওয়া হয়েছে। যদিও ওষুধ প্রস্তুতকারী মার্কিন সংস্থা ‘জিলিয়াড সায়েন্সেস’-এর দাবি, ভুলবশত প্রকাশ্যে আসা এবং ডিলিট করে দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্তে আসা ঠিক নয়। বরং এই ওষুধ কিছু সুফল পাওয়া গেছে।-খবর আনন্দবাজার পত্রিকার

হু-এর ওয়েবসাইটে জিলিয়াড সায়েন্সেস-এর তৈরি করা ওষুধ ‘রেমডেসিভির’ সম্পর্কে একটি রিপোর্টের সংক্ষিপ্তসার প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সূত্র ধরেই খবরটি প্রথম প্রকাশ্যে আনে ব্রিটিশ দৈনিক ‘ফাইনান্সিয়াল টাইমস’। হু-এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই রিপোর্টের স্ক্রিন শট দিয়ে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, জিলিয়াডের সম্ভাব্য করোনাভাইরাসের ওষুধ ব্যর্থ হয়েছে।

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিলিয়াডের তৈরি ওষুধ ‘রেমডেসিভির’ চিনের ২৩৭ জন চিনের রোগীর উপর প্রয়োগ করা হয়েছিল। তার মধ্যে ১৫৮ জনকে সরাসরি ওষুধ দেওয়া হয়েছিল এবং ৭৯ জনকে একটি নিয়ন্ত্রিত দলে রেখে প্রয়োগ করা হয়েছিল। অর্থাৎ এই ৭৯ জনকে দু’তিনটি দলে ভাগ করে একটি দলকে নতুন ওষুধ এবং অন্য দলগুলিকে প্রচিলত ওষুধ দিয়ে বা কোনও ওষুধ না দিয়ে পার্থক্য বোঝার চেষ্টা হয়েছিল। এক মাস পর দেখা যায়, নতুন ওষুধ দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্যুর হার বেশি। মৃত্যুর হার ১২.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৩.৯ শতাংশ হয়ে যায়। এ ছাড়া ১৮ জন রোগীর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় তাঁদের ওষুধ প্রয়োগ করা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই কারণেই এই ওষুধ ব্যর্থ বলে ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:সূর্যের তাপে বসে থাকলেই দূর হবে করোনা: ট্রাম্পের নতুন ফর্মুলা

তবে হু-এর পক্ষ থেকে ফাইনান্সিয়াল টাইমসকে জানানো হয়েছে, ভুল করে ওই খসড়া রিপোর্ট প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। রিপোর্টটি বিস্তারিত রিভিউ করা হয়নি। ওষুধ ব্যর্থ হয়েছে এই দাবি মানতে নারাজ প্রস্তুতকারী সংস্থা জিলিয়াড সায়েন্সেসও। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘আমরা মনে করি ওই খসড়া রিপোর্টে ওষুধ প্রয়োগ থেকে উঠে আসা তথ্যের যথার্থ বিশ্লেষণ করা হয়নি। ওষুধ বন্ধ করা হয়েছিল কারণ, প্রয়োজনীয় সংখ্যক নমুনা (এ ক্ষেত্রে মানুষ) পাওয়া যায়নি। তাই এই ওষুধ প্রয়োগ থেকে পাওয়া তথ্য অসম্পূর্ণ এবং পরিসংখ্যানগত ভাবে অর্থহীন।’’

সংস্থার পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, রেমডেসিভির সম্পর্কে ওই তথ্যই শেষ কথা নয়। আরও বড় আকারে ওষুধের প্রয়োগ চলছে এবং শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সেই তথ্য থেকে খুব শীঘ্রই স্পষ্ট ছবিটা পাওয়া যাবে।

করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় রেমডেসিভিরই প্রথম ওষুধ হিসেবে মানবদেহে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ শুরু হয়েছিল। এই টিকা দেওয়া হয়েছিল ইন্ট্রাভেনাস পদ্ধতিতে। এই টিকার পরীক্ষা গোটা বিশ্বেই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আশা জাগিয়েছিল। সেই আশাতেই সিপলা, গ্লেনমার্ক, ডক্টর রেড্ডির মতো ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি এই টিকা তৈরির জন্য প্রাথমিক প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যে এই খবরে সেই সব সংস্থার উদ্যোগেও প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে গেল।