২০ এপ্রিল ২০২০, ১৬:২৭

গাজীপুর যেভাবে করোনার হটস্পট হয়ে উঠলো

  © বিবিসি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, নারায়ণগঞ্জের পর করোনাভাইরাস সংক্রমণের অন্যতম হটস্পট হয়ে উঠেছে গাজীপুর। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গাজীপুরে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। সেখানে আক্রান্তের হার প্রায় ২০ শতাংশের কাছাকাছি। আজকের তথ্য মতে গাজীপুরে আক্রান্তের হার ১৯.৫ শতাংশ।

তবে গাজীপুর কীভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন হটস্পট হয়ে উঠলো সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন জেলার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার। করোনাভাইরাস নিয়ে জেলা প্রশাসনের সাথে অনুষ্ঠিত এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এমন তথ্য দেন।

পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার বলেন, করোনা ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর অংশ হিসেবে জেলাটিতে লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে মাঠ পর্যায়ে নানা ধরণের সমস্যার মুখে পড়ছেন তারা। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানাগুলো খোলা থাকার বিষয়টি। প্রথম দিকে জেলাটি অনেক ভাল ছিল। হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করার কারণে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারেনি।

কিন্তু পরেরবার যখন গার্মেন্টস কারখানাগুলো খুলে গেলো আর শ্রমিকরা বেতনের আশায় ফিরতে শুরু করলো তখন থেকে অবস্থা পাল্টে যেতে শুরু করলো। তিনি বলেন, কালীগঞ্জ ও কাপাসিয়ার দিকে ছোঁয়া এগ্রো ফার্ম নামে একটি কারখানায় প্রথম একজনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়।

এর পর ওই কারখানার আরো শ্রমিকদের নমুনা পরীক্ষা করে আরো ২৫ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এই কারখানাটির ব্যবসা মূলত নারায়ণগঞ্জ এবং চট্টগ্রামভিত্তিক। সেখান থেকে শুরু হওয়ার পর সংক্রমণ পরে পুরো জেলায় ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া সেই সাথে নারায়ণগঞ্জের সাথেও জেলার যোগাযোগ চালু ছিল।

তবে এখনো অন্য কারখানাগুলো তেমন সংক্রমিত হয়নি। আরেকটি কারখানায় একজনের মধ্যে সংক্রমণ পাওয়া গেছে। সে এখন সেই কারখানাতেই অবস্থান করছেন। এই অবস্থার মধ্যে যদি আবারো কারখানাগুলো খুলে যায়, আবার যদি শ্রমিক আসা-যাওয়া করে তাহলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের সুযোগে অনেক ব্যবসায়ী সুযোগ নিচ্ছে। তারা পিপিই বানানোর নাম করে শ্রমিকদের ডেকে এনে অন্য ধরণের পণ্য সামগ্রী বানাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কারখানাগুলো যেভাবে খোলা রয়েছে তাতে লকডাউন নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জরুরী।

এখনো অনেক কারখানা মালিক আছেন যারা বেতন দেবেন বলে শ্রমিকদেরকে ডেকে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু তারা বেতন দিতে পারছেন না। এটি লকডাউন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গাজীপুরে অনেক বড় অন্তরায়।