১৪ এপ্রিল ২০২০, ১৩:৫৮

করোনার উপসর্গ, মাকে বনে ফেলে গেলেন সন্তানেরা!

  © সংগৃহীত

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ৫০ বছর বয়সী মাকে গাজীপুরের শফিপুরে শাল-গজারির বনে ফেলে রেখে গেছেন তাঁর সন্তানেরা। পরে রাত দেড়টার দিকে উপজেলা প্রশাসন তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠায়।

বনে রাখার আগে সন্তানেরা বলেন, ‘মা, তুমি বনে এক রাত থাকো। কাল এসে নিয়ে যাব’। উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘রাত ৮টার দিকে বনের ভেতর এক নারীর কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয়রা খবর দেয়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ লোকজন ওই নারীর কাছে যান।’

তিনি জানান, ওই নারীর ছেলেমেয়েরা কীভাবে জঙ্গলে ফেলে গেছেন, সেই কাহিনি বলেন। রাত ১২টার দিকে ইউএনওকে খবর দেওয়া হয়। রাত দেড়টার দিকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি না নিলে আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে রাখা হয় তাকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, তার বাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায়। গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় তার এক ছেলে, দুই মেয়ে ও জামাতা চাকরি করেন। সবাই মিলে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। ওই নারী সবাইকে রান্না করে খাওয়াতেন।’

তিনি জানান, ওই নারীর কয়েক দিন ধরে  জ্বর, সর্দি, কাশি শুরু হলে লোকজন তাঁদের তাড়িয়ে দেন। একটি পিকআপ ভাড়া করে নালিতাবাড়ী যাওয়ার পথে সখীপুরের জঙ্গলে সন্তানেরা মাকে ফেলে যান।

এ ব্যাপারে ইউএনও আসমাউল হুসনা লিজা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ থাকায় তার এক ছেলে, দুই মেয়ে ও জামাতারা তাঁকে বনে রেখে চলে যান। কীভাবে তারা মায়ের সঙ্গে এমন আচরণ করলেন? গ্রামবাসী খোঁজ না পেলে রাতে হয়তো ওই নারীকে শিয়াল–কুকুরে খেয়ে ফেলত।’

সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক শাহীনুর আলম বলেন, ওই নারীর জ্বর, গলাব্যথা, সর্দি ও কাশি রয়েছে। করোনার উপসর্গ থাকায় তাকে রাতেই কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ভর্তির সুযোগ না পাওয়ায় ঢাকা মেডিকেলে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। আজ নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে।