১২ এপ্রিল ২০২০, ১৯:৫৯

মধু-কালোজিরা খেলে করোনা সেরে যাবে, এ তথ্য কতটা সত্য?

  © সংগৃহীত

কালোজিরা থেকে হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য ব্রেকফাস্টের আগে মধু ও গরম পানির সঙ্গে সাতটি কালোজিরা খেয়ে ফেলুন। তাহলে কোভিড-১৯ এর হাত থেকে বাঁচবেন। এমন মেসেজ ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকে। কোনো কোনো মেসেজে সাত গ্রাম কালোজিরার কথা বলা হচ্ছে।

ফক্স নিউজের একটি ভিডিও সঙ্গে শেয়ার করা হচ্ছে। এরসঙ্গে সুপার ইমপোজ করা হয়েছে গ্রাফিক। তাতে বলা হচ্ছে, নতুন গবেষণা অনুয়ায়ী কালোজিরা এবং এর তেল করোনা সংক্রমণের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করছে। এই মেসেজ শেয়ারের পাশাপাশি এই তথ্য ছড়িয়ে দিতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

তবে মেসেজটির সত্যতা যাচাই করেছে ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার। আসল সত্য হচ্ছে কালোজিরা কোভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধ করে তার কোনো প্রমাণ নেই। এতে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ওষুধও থাকে না।

মুসলিম ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে কালোজিরার ঔষধি গুণ সমাদৃত। উত্তর আফ্রিকার অধিবাসীদের মধ্যেও কদর রয়েছে। এর নির্যাস সর্দি এবং অ্যালার্জির ক্ষেত্রে কার্যকরী। তবে তা কোভিড-১৯ ভাইরাসকে ঠেকাতে কার্যকরী, তার কোনো প্রমাণ নেই।

কালোজিরার বৈজ্ঞানিক নাম নাইজেলা স্যাটিভা। এটিতে নাইজেলিডিন এবং আলফা হেরেডিন নামে দু’টি নির্যাস পাওয়া যায়। গবেষক সেলিম বুশেটুফ এবং নুরউদ্দিল মাসুমের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, নির্যাস এবং কিছু ওষুধের যৌগ তৈরি করে কোভিড-১৯ ভাইরাসের ওপর প্রয়োগ করা হলে যে শক্তি উৎপন্ন হয় তা ক্লোরোকুইনের কাছাকাছি। এমনকি হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের চেয়ে বেশি।

তাই কোভিড-১৯ চিকিৎসায় কালোজিরার কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাদের মতে, এজন্য আরো গবেষণার প্রয়োজন। ২০১৪ সালে ফার্মাকগনসি পত্রিকায় প্রকাশিত গবেষণাপত্রে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে কালোজিরা এবং ক্লোরোকুইনের ভূমিকার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

ছয় বছর আগে কোভিড-১৯ রোগটির অস্তিত্বই ছিল না, ফলে তা কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে খাটে না। কোনো গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়নি, কালোজিরায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন পাওয়া যায়।