হিকমাহ আই হসপিটালে বিনামূল্যে গ্লকোমা চিকিৎসা ক্যাম্পেইন
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে গ্লকোমা চিকিৎসা ক্যাম্পের আয়োজন করেছে হিকমাহ আই হসপিটাল। বিশ্ব গ্লকোমা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে ক্যাম্পের পাশাপাশি দিনব্যাপী ৫০ শতাংশ ছাড়ে সকল পরীক্ষা করার ব্যবস্থাও করেছে হসপিটালটি।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় রাজধানীর খিলগাঁওয়ে হিকমাহ আই হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম.হাফিজুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন করেন।
এ সময় বক্তরা বলেন, গ্লকোমা একটি দৃষ্টির নিরব ঘাতক। গ্লকোমার কারনে দৃষ্টি একবার হারিয়ে ফেললে তা আর কখনো ফিরে আসেনা। অধিকাংশ রোগীরা এই রোগের লক্ষণ বুঝতে পারে না। চশমা পরিবর্তনের সময় বা নিয়মিত চক্ষু পরীক্ষার সময় চিকিৎসকরা গ্লকোমা নির্ণয় করে থাকেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে লক্ষণ দেখা যেতে পারে যেমন ঘন ঘন চশমার গ্লাস পরিবর্তন হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, আলোর চারপাশে ব্যথা অনুভুত হওয়া, ছোট ছোট বাচ্চারা জন্মের পর চোখের কর্ণিয়া ক্রমাগত বড় হয়ে যাওয়া বা সাদা হয়ে যাওয়া, চোখ লাল হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি।
তারা বলেন, শিশু থেকে বয়স্ক যে কারোরোই গ্লকোমা রোগ হতে পারে। পারিবারের কারো গ্লকোমার ইতিহাস থাকলে; এছাড়াও চোখে আঘাত পাওয়া, ক্ষীণদৃষ্টি সমস্যা এমনকি ডায়াবেটিসের কারনেও গ্লকোমা হতে পারে ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. হাফিজুর রহমান বলেন, গ্লকোমা চোখের একটি জটিল রোগ। এতে চোখের স্নায়ু ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং চোখের দৃষ্টি কমে যায়। একসময় রোগী স্থায়ী অন্ধত্বের দিকে ধাবিত হয়। এটা অনেকটা চোখের স্নায়ুতে ব্লাড প্রেশারের মত। এর স্বাভাবিক মাত্রা ১০ থেকে ২১। তবে ২১ এর উপরে উঠলে তা আশঙ্কাজনক।
তিনি বলেন, চোখের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলেও অনেক সময় গ্লকোমার পরীক্ষা করানো হয় না। ফলে পরবর্তীতে গ্লকোমার কারনে ক্ষতির পরিমান অনেক বেশী হয়ে যায়। অনেক সময় চোখের ছানি অপারেশন করলেও গ্লকোমা পরীক্ষা করে চিকিৎসা নেয়া হয় না। তাই দেখা যায় ছানি অপারেশনের পরেও অনেকে অন্ধত্ব বরণ করে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান বিশ্বে প্রায় আশি লাক্ষাধিক মানুষ গ্লকোমার কারণে স্থায়ী অন্ধত্বের শিকার হয়েছে। এদের বেশী ভাগই দক্ষিণ এশিয়ার। গ্লকোমা সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে বিরাট জনগোষ্ঠী অপরিবর্তনযোগ্য অন্ধত্বের শিকার হন যা প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করতে পারলে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই এই বিষয়ে সচেতন হওয়া অতীব জরুরী।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মুগদা মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. শরিফুল ইসলাম, হিকমাহ আই হসপিটালের সহকারী ব্যবস্থাপক শিশির কাউছার প্রমুখ।শোভযাত্রা, সমাবেশ ও ক্রিনিং ক্যাম্পে আরো উপস্থিত ছিলেন হিকমাহ আই হসপিটালের কনসালটেন্টবৃন্দ, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নার্সবৃন্দ।