বহুল পরিচিত মসলা রসুনের ভেষজগুন
রসুন একটি বহুল পরিচিত মসলা। এটি যুগযুগ ধরে রান্নায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর বৈজ্ঞানিক নাম (Allium sativum) । বাংলাদেশের প্রায় সবজেলাতেই কমবেশি উৎপাদিত হয় রসুন। এটি মূলত রান্নার ঘ্রাণ ও স্বাদ বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হয়। খুব প্রচলিত এই মসলাটি আমরা সবাই ব্যবহার করলেও এর পুষ্টিগুন ও ভেষজ গুনাগুন সম্বন্ধে আমাদের স্বচ্ছ ধারনা নেই বললেই চলে।
আসুন জেনে নেয়া যাক রসুনের পুষ্টিগুন ও ভেষজ গুন সম্বন্ধে। রসুনে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন ও মিনারেলস।
অন্যদিকে এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস যেমন অ্যালিন, অ্যালিসিন,অ্যাজোইন, ডাইঅ্যালাইলসালফাইড, ডাই অ্যালাইল ডাইসালফাইড, ডাইঅ্যালাইল ট্রাইসালফাইড, এস অ্যালাইলসিস্টেইন, স্যাপোনিন ও ফ্লাভোনোয়িডস ইত্যাদি।
মূলত এই ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস গুলোই ঔষধি গুনাগুন প্রদর্শন করে থাকে। এবার তাহলে জেনে নেয়া যাক রসুনের কিছু ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে-
ক্যান্সার প্রতিরোধে
গবেষণায় দেখা গেছে রসুন বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। যেমন ডাইঅ্যালাইলসালফাইড, ডাই অ্যালাইল ডাইসালফাইড দেহে অক্সিডেশনকে বাধগ্রস্ত করে এবং কোলেরেক্টাল ক্যান্সার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া রসুনে উপস্তিত এস অ্যালাইলসিস্টেইন প্রস্টেট ক্যান্সার এবং অ্যালিসিন কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
হৃদরোগ প্রতিরোধে
রসুনে রয়েছে ডাইঅ্যালাইল ট্রাইসালফাইড ও ডাই অ্যালাইল ডাইসালফাইড যা রক্তনালীকে প্রসারিত করে অর্থাৎ দেহে কোলেস্টেরল এর মাত্র কমিয়ে হৃদরোগের ঝুকি কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া এটি দেহের লিপিডের পরিমান নিয়ন্ত্রনে রাখতে বিশেষ ভুমিকা পালন করে থাকে।
উচ্চরক্তচাপ কমাতে
গবেষনায় দেখা গেছে যাদের উচ্চরক্তচাগ আছে তারা নিয়মিত রসুন খেলে উচ্চরক্তচাপ কমে গেছে। প্রদাহজনিত সমস্যা প্রতিরোধে রসুনে রয়েছে অরগানোসালফার যৌগ যা দেহের প্রদাহজনিত সমস্যা দূর করে। এছাড়া এটি অ্যালঝেইমার নামক মস্কিষ্কের রোগ প্রতিরোধ করতেও সহায়তা করে।
লিভার রোগ প্রতিরোধে
এতে রয়েছে অ্যালিসিন নামক ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস যা লিভারকে ক্ষতিগ্রস্থতার হাত থেকে বাঁচায়।
ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর করতে
ওসুন ঠান্ডাজনিত সমস্যা দূর করতে বিশেষ ভুমিকা পালন করে থাকে। নিয়মিত রসুন খেলে ঠান্ডাজনিত সমস্যা অনেকাংশেই দূর করা সম্ভব।
বুড়িয়ে যাওয়া বা এজিং (অমবরহম) প্রতিরোধে
মানুষ বুড়িয়ে যায় মূলত দেহের কোষগুলো যখন অক্সিডেশন হতে শুরু করে থখন থেকে আর এই অক্সিডেশন প্রতিরোধ করতে পারে রসুন। সুতরাং রসুন আপনার ত্বককে রাখবে সতেজ।
ভারীধাতুর বিষক্রিয়া হতে রক্ষা করে
রসুনের ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস সমুহ ভারীধাতুর বিষক্রিয়া হতে দেহকে রক্ষা করে।
আসুন নিয়মিত রসুন খাই, সুস্থ্য সবল জীবন পাই।
লেখক: শিক্ষার্থী ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
ই-মেইল: billalanftiu@gmail.com