১০ নভেম্বর ২০২৪, ১৯:০৫

শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে যেভাবে ত্বকের যত্ন নেবেন

শীতে ত্বকের যত্ন  © সংগৃহীত

শীত মানেই হিমহিম কনকনে ঠাণ্ডা, যা ত্বকের জন্য বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ইউরোপ-আমেরিকা বা অন্যান্য শীতপ্রধান দেশের মতো বাংলাদেশে বরফ না পড়লেও, শীতকালে তাপমাত্রা এক অংকের ঘরে নেমে আসে। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চল ও গ্রামীণ এলাকায় ঠাণ্ডা আবহাওয়া আরও প্রকট হয়ে ওঠে। এই শীতের শুষ্কতা এবং মাঝে মাঝে আসা হাড়কাঁপানো শৈত্য প্রবাহের কারণে ত্বক রুক্ষ ও ফাটতে শুরু করে, যা নানান সমস্যার কারণ হতে পারে।

গত ৫ নভেম্বর আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আরও কয়েক দিন আবহাওয়া প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে বাংলাদেশে সাধারণত নভেম্বরের শেষে ও ডিসেম্বরের শুরুতে শীতের আগমন ঘটে। তাই ত্বককে সুস্থ ও মসৃণ রাখতে শীতকালে কিছু অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখতে কিছু সাধারণ নিয়ম অনুসরণ করা জরুরি। 


চলুন জেনে নেওয়া যাক শীতে ত্বকের যত্নের কয়েকটি কার্যকরী পরামর্শ

জলপাই তেল
সব ধরনের ত্বকের যত্নেই জলপাইয়ের তেল বা অলিভ অয়েল খুবই উপকারী। অলিভ অয়েল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে পা থেকে গলা পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া এর সঙ্গে মধু ও চিনি মিশিয়ে ঘন ক্রিমের মতো প্যাক তৈরি করে স্ক্রাবের কাজ করা যায়। এটি ব্যবহারের ফলে ত্বকের মৃত কোষ উঠে যায়। এ ছাড়া কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট ফাটা বন্ধ হয়ে যায়।

মধু
রূপচর্যার কাজে মধু অপরিহার্য। মধু সব সময় সবভাবেই ব্যবহার করা য়ায়। তবে শীতকালে এর ব্যবহার আরও বেড়ে যায়। অন্য যেকোনো প্যাকের সঙ্গে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায় মধু। মধু নিমিষেই ত্বকের শুষ্কতা দূর করে। ত্বকের যেকোনো সমস্যায় মধু ওষুধের মতো করে৷ পাকা কলা ত্বক মসৃণ ও উজ্বল করতে পাকা কলার জুড়ি মেলা ভার। বেসন, দুধ ও কলা ব্লেন্ড করে মুখে, গলায়, হাতে ও পায়ে লাগাতে পারেন। ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগান৷ এটি নিয়মিত ব্যবহারের ফলে ত্বক পাবে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা, হয়ে উঠবে নরম ও কোমল৷

নারিকেল তেল
মুখ ও শরীরের ত্বকের পাশাপাশি গোড়ালি, হাঁটু, কনুইয়েরও বিশেষ খেয়াল রাখা প্রয়োজন, বিশেষ করে শীতকালে৷ না হলে এ জায়গাগুলো রুক্ষ ও কালো হয়ে যায়৷ এর যত্নে ব্যবহার করতে পারেন নারিকেল তেল। এ জন্য প্রথমে ত্বক ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর তেল আলতো করে ওই জায়গাগুলোতে লাগিয়ে নিন। রাতের বেলা এ কাজ করাই ভালো।

কমলা লেবু
কমলালেবুতে উপস্থিত ভিটামিন সি ত্বকের বলিরেখা রোধ করে৷ কমলালেবুর খোসা, সরবাটা, ময়দা বা বেসনের প্রলেপের ব্যবহার রূপটান হিসেবে বহুদিন প্রচলিত৷ এই শীতে যত কমলালেবু খাবেন, তার খোসা ফেলবেন না৷ রোদে শুকিয়ে সংগ্রহ করে রেখে দিন। পরে গুঁড়া করে ব্যবহার করতে পারবেন৷

গোলাপজল ও গ্লিসারিন
শীতকালে গোলাপজল ও গ্লিসারিন একটি বড় ভূমিকা রাখে ত্বকের যত্নে। এ দুটি একসঙ্গে মিশিয়ে লাগালে ত্বক সুন্দর থাকে, থাকে মসৃণ। গ্লিসারিন যেকোনো ত্বকে খুব দ্রুততার সঙ্গে যেমন কাজ করে তেমনি ত্বক রাখে মোলায়েম ও প্রাণবন্ত। ত্বকে থাকা নানা সমস্যাও দূর করে। মিশ্রণটি রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করাই ভালো।

তবে এসবের পরও মূল কথা হলো, শরীর ভেতর থেকে আর্দ্র না হলে এর ছাপ পড়বে ত্বকের ওপর৷ তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খেতে হবে। দিনে কমপক্ষে আট থেকে দশ গ্লাস পানি খাওয়া আবশ্যক৷ ডাবের পানি, ফলের রসও পান করতে পারেন৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতে ত্বকের যত্নে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চললে ত্বক থাকবে উজ্জ্বল ও সুস্থ।