২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৫২

যেসব খাবার আপনার চুল ঘন ও মজবুত করবে

যেসব খাবার আপনার চুল ঘন ও মজবুত করবে  © সংগৃহীত

শক্ত, মজবুত ও ঝলমলে চুল কে-না চায়। চুল মানুষের সৌন্দর্যের প্রতীক। সৌন্দর্যের ৬০ ভাগই নির্ভর করে এই চুলের ওপর। স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে যেমন আমরা সুস্থ থাকি, তেমনি ত্বকও সুন্দর হয়- এটা মোটামুটি সবাই জানে। কিন্তু এটা জানেন কী, চুলের ওপরেও খাবারের প্রভাব পড়ে ব্যাপকভাবে। খাবারের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রোটিন গ্রহণ করলে নতুন চুল গজায়। 

শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার-এর পাশাপাশি আপনি কী খাচ্ছেন তাও কিন্তু চুলের জন্য সমান জরুরি আসুন জেনে নেই কোন খাবারগুলো খেলে আপনার চুল হবে আরও ঘন এবং প্রাণবন্ত।

মাছ
খাদ্য তালিকায় মাছ রাখবেন অবশ্যই। বিভিন্ন ধরনের মাছ খাবেন নিয়মিত। মাছে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড প্রাকৃতিক তেল হিসেবে চুল রাখে ঝলমলে। সামুদ্রিক মাছে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি, যা চুলকে করে তোলে শক্ত ও মজবুত। সামুদ্রিক প্রায় সব মাছেই রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

বাদাম
বাদামে বায়োটিন উপাদান আছে যা চুল দ্রুত বৃদ্ধি করে চুলের গোড়া মজবুত করে থাকে। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের আরেকটি চমৎকার উৎস বিভিন্ন ধরনের বাদাম। কাজু বাদাম, পেস্তা বাদাম, চিনা বাদাম ও কাঠ বাদামে ওমেগা থ্রির পাশাপাশি ভিটামিন ই এবং বায়োটিন মেলে। এসব উপাদান চুল ভালো রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় এক কাপ বাদাম রাখুন। কয়েক মাসের মধ্যে আপনি আপনার পরিবর্তন দেখতে পাবেন।

সবুজ শাকসবজি
প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি খান। এগুলোতে বিভিন্ন ধরনের মিনারেলের পাশাপাশি পাওয়া যায় আয়রন, যা চুলের ভেঙে যাওয়া প্রতিরোধ করে। 

পনির, দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার
এসব খাবারে আছে প্রোটিন, ভিটামিন বি-৫ এবং ভিটামিন-ডি। আধুনিক গবেষণা প্রমাণ করে যে, ভিটামিন-ডি চুলের গোড়ার সঠিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

ওটস
ওটসে রয়েছে প্রোটিন, তামা, দস্তা ও ভিটামিন বি-এর মিশ্রণ। প্রাতঃরাশে ওটস খেলে চুল পড়াও কমবে, শরীরও ভালো থাকবে।

গাজর


কেবল দৃষ্টিশক্তি ও ত্বক ভালো রাখার জন্যই যে গাজর উপকারী তা নয়। গাজরেও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ যা চুলের পক্ষে উপকারী। নিত্যদিনের ডায়েটে গাজর রাখলে চুল পড়ার সমস্যায় লাগাম পড়ানো যায়। স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্যও নিয়মিত খাওয়া চাই গাজর। গাজরে থাকা বিটা-ক্যারোটিন ভিটামিন এ শোষণে সাহায্য করে। আর ভিটামিন এ আমাদের দেহের কোষ ও চুলের জন্য ভীষণ প্রয়োজনীয়। এই ভিটামিনের অভাবে চুল পড়ে যায়। গাজর ছাড়াও মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়া ও আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ মেলে।

পাকা টমেটো
টমেটোতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা মাথার স্ক্যাল্প-এর রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়। এর কারণে চুলের ফলিকল স্টিমুলেটেড হয়। একটি পাকা টমেটো দিয়ে জুস বানিয়ে খেয়ে নিন।

শসা
শসাতে আছে যথেষ্ট পরিমাণে সিলিকা, সালফার এবং ভিটামিন-এ। এই উপাদান চুলের বৃদ্ধি ঘটায় এবং চুল পড়া বন্ধ করে। কাঁচা শসার জুস স্বাস্থ্যকর এবং চুল গজাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খোসাসহ একটি কচি শসা খেলে নতুন চুল গজাবে।

আমলকী


আমরা সবাই চুলের যত্নে আমলকীর গুঁড়া ব্যবহার করি। তবে লবণ দিয়ে চার থেকে পাঁচটি আমলকী চিবিয়ে খেলেও চুল পড়া অনেকাংশে রোধ হবে। আমলকীতে আছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা নতুন চুল গজাতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি চুল পড়া রোধ করে। এ ছাড়া চুল ঘনও হয়।

ডিম
এটি প্রোটিনের একটি বড় উৎস। প্রোটিনের পাশাপাশি সালফার, জিঙ্ক, আয়রন ও সেলেনিয়াম মেলে ডিম থেকে। এসব উপাদান মজবুত চুলের জন্য প্রয়োজনীয়। ডিমে পাওয়া যায় বায়োটিন ও ভিটামিন বি এই দুই উপাদান চুলের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য কাজ করে। এছাড়া আয়রনের অভাবে উদ্ভুত রোগ যেমন এনেমিয়া নারীদের চুল পড়ে যাবার একটি বড় কারণ।

দই
ভিটামিন বি ১২, প্রোটিন, আয়োডিন ও ক্যালসিয়ামের উৎস দই। দইয়ের প্যাক যেমন চুল সিল্কি করতে সাহায্য করে, তেমনি দই খেলেও চুল হয় সুন্দর।

পেয়ারা, পেঁপে ও কমলা
এসব ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন-সি। ভিটামিন-সি চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন করার কাজে কৈশিক-জালিকা বা সরু রক্তনালীকে সহায়তা করে। যা চুলের ভেঙে যাওয়া প্রতিরোধ করে।

ঋতু পরিবর্তনের কারণে একসঙ্গে সব খাবার নাই বা পেতে পারেন তবে এই সব খাবার থেকে নিয়মিত চার থেকে পাঁচটি খাবার ডায়েট লিস্টে রাখুন। আর নিয়মিত চুলের পরিচর্যাও করুন তাহলে সুন্দর চুল আপনার কাছে আর অধরা থেকে যাবে না।