০৫ জুলাই ২০২৩, ১১:০১

কৃত্রিম মিষ্টি ক্যান্সারের কারণ, কোকসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য চিহ্নিত করলো ডব্লিউএইচও

কোকসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য চিহ্নিত করলো ডব্লিউএইচও  © সংগৃহীত

ডায়েট কোলা, চুইংগামসহ অন্যান্য মিষ্টি স্বাদযুক্ত পণ্য তৈরিতে চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত ‘অ্যাসপার্টাম’ নামক কৃত্রিম মিষ্টিকে ক্যান্সার সৃষ্টির সম্ভাব্য কারণ হিসেবে ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ডায়েট কোলাগুলোতে কৃত্রিমভাবে মিষ্টি স্বাদ নিয়ে আসার জন্য ব্যবহার করা হয় অ্যাসপার্টাম। যা মূলত ক্যালরি ফ্রি কিন্তু এই উপাদানটি ১ লিটার কোলায় প্রায় ২২ চামচ চিনির সমান কাজ করে। আর এই অ্যাসপার্টামকেই কার্সিনোজেন হিসেবে বিবেচিত করছে ডব্লিউএইচও এবং আইএআরসি।

‘অ্যাসপার্টাম’ নামের এ কৃত্রিম মিষ্টি দিয়ে কোকাকোলার ডায়েট সোডা থেকে শুরু করে মার্সের এক্সট্রা চুইংগাম এবং স্ন্যাপেলের কোমল পানীয় তৈরি করা হয়। আর এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সার (আইএআরসি) এ উপাদানটিকে ‘মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী’ হিসেবে ঘোষণা দেবে। আগামী ১৪ জুলাই এই কৃত্রিম চিনিকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী যৌগ বলে ঘোষণা করবে আইএআরসি।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে এবং তাদের মাধ্যমে অ্যাসপারটেমের নমুনা পরীক্ষা করে এতে ক্যান্সার জীবাণু থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে ডব্লিউএইচও। এবার কোন কোন জিনিস থেকে মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারে- সেই তালিকায় অ্যাসপারটেমকে রাখা হচ্ছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FDA) ১৯৮১ সালে অ্যাসপারটেম ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। এরপর থেকে পাঁচবার এর নিরাপত্তা পর্যালোচনা পর্ব চলে। বর্তমানে প্রায় ৯০টি দেশে এই কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা হয়। এক চামচ সাধারণ চিনির তুলনায় ২০ গুণ বেশি মিষ্টি কৃত্রিম এই চিনি। 

কোকাকোলা, ডায়েট সোডা, চুইংগাম এবং আরও কিছু নরম পানীয়তে অ্যাসপারটেম ব্যবহার করা হয়। বাজারে যে সব ‘ইনস্ট্যান্ট টি’ বা তৈরি করা চা পাওয়া যায় তার মধ্যে ৯০ শতাংশতেই এই যৌগ থাকে। অথচ, বিশ্বজুড়ে এক বিপুল বাজার তৈরি করে রেখেছে এই ধরনের পণ্য।

আরও পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বরে এক দিনে চারজনের মৃত্যু

আইএআরসির বিশেষজ্ঞ দল এ মাসের শুরুতে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে একটি বৈঠকে বসেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কৃত্রিম চিনি অ্যাসপার্টেমকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হবে। আইএআরসি এর আগেও খাদ্য পণ্যকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। আর সংস্থাটির এমন ঘোষণার পর বাজারে এর বড় প্রভাব পড়েছিল। অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যে ব্যবহৃত উপাদান বদলাতে পর্যন্ত বাধ্য হয়েছিল।

সম্ভাব্য ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান একজন মানুষ কতটুকু পর্যন্ত খেতে বা পান করতে পারেন— এই তথ্য জানায় না আইএআরসি। এ বিষয়ে মতামত দিয়ে থাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আরেক অঙ্গ সংস্থা জেইসিএফএ। এ সংস্থাটি ১৯৮৩ সাল থেকে বলে আসছে, একজন মানুষ সীমিত পরিমাণ অ্যাসপার্টাম গ্রহণ করতে পারেন। তবে জেইসিএফএ আবার নতুন করে অ্যাসপার্টাম নিয়ে জুলাইয়েই নতুন মতামত প্রকাশ করবে।