এবার ডেঙ্গুর কোন ভেরিয়েন্ট ছড়াচ্ছে, জানে না স্বাস্থ্য বিভাগ
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরসের চারটি ভেরিয়েন্ট (ধরন) রয়েছে। এর মধ্যে দেশে কোন ধরনটিতে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে তা সম্পর্কে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে কোনো তথ্য নেই। পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে ডেঙ্গুর যথাযথা নজরদারি করতে পারছে না স্বাস্থ্য বিভাগের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।
গতকাল রবিবার (১১ জুন) আইইডিসিআরের সম্মেলনকক্ষে মানুষ, প্রাণী ও পরিবেশের স্বাস্থ্যবিষয়ক ‘ওয়ান হেলথ কনফারেন্স’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেছেন, ডেঙ্গুর ওপর নজরদারি করার কার্যক্রম ফান্ডের অভাবে বন্ধ আছে। এ বছর ডেঙ্গুর কোন ধরনটির (ভেরিয়েন্ট) প্রাদুর্ভাব চলছে, তা আমাদের জানা নেই।
রোগতত্ত্ববিদেরা জানিয়েছেন, ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন হলো ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪। একটি ধরনে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হলে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। অর্থাৎ শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে ওঠে। তাই পুনরায় ওই ধরনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। তবে অন্য তিনটি ধরনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
গত ২৯ মে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ গুন বেশী। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরও অর্থের অভাবে আইইডিসিআরের নজরদারি কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার ঘটনাকে দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত বলে করছেন অনেক জনস্বাস্থ্যবিদ।
জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, চিকিৎসার প্রয়োজনেও ডেঙ্গুর ধরন জানা দরকার। না হলে সঠিক চিকিৎসা করা সম্ভব হবে না। এদিকে অনেকেই দ্বিতীয়বার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। এর কারণ ভিন্ন ধরনে (ভেরিয়েন্ট) আক্রান্ত হওয়া। কোনো ব্যাক্তি যদি ডেঙ্গুতে দ্বিতীয়বার বা তৃতীয়বার আক্রান্ত হন, তার রোগের তীব্রতা ও জটিলতা বেশি দেখা দেয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ শাখা সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ৯০ শতাংশ ছিল ডেন-৩–এ আক্রান্ত, ৯ শতাংশ ছিল ডেন-৪–এ আক্রান্ত।
গত ১০ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ডেঙ্গু নিয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ‘শক সিনড্রোম’ বেশি দেখা যাচ্ছে।