‘রাবেয়া সন্তানকে হাদির আদর্শে গড়ে তোলার শপথ নিয়ে শক্ত থাকার চেষ্টা করছে’
দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে মৃত্যুবরণ করেছেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি। মৃত্যুর পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তিন উপদেষ্টা তার বাসায় গিয়েছিলেন। বাসা থেকে ফিরে তাদের মধ্যকার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার হাদির পরিবারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানিয়েছেন।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম ফেসবুকে এ বিষয়ে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন।
দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য তার ফেসবুক পোস্টটি তুলে ধরা হল:
আজ তিন উপদেষ্টা, নুরজাহান বেগম, শারমিন মুরশিদ, এবং আমি গিয়েছিলাম রামপুরায় হাদির বাসায়। হাদির স্ত্রী রাবেয়া, তার মা এবং ছোট ১০ মাসের শিশুকে দেখলাম। রাবেয়া সন্তানকে হাদির আদর্শে গড়ে তোলার শপথ নিয়ে শক্ত থাকার চেষ্টা করছে, তার জন্যে কান্নাও কষ্টকর। ছেলে মায়ের চোখে পানি দেখলে কাঁদে।
হাদি তাকে অনেক দায়িত্ব দিয়ে গেছে, হাদির অনেক অসমাপ্ত কাজও হয়ত তাকে করতে হবে। হাদির মা কান্না কেমন তা বলে বোঝাবার মতো নয়। তিনি কথা বলছেন, চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে। আবার তার চোখে ছেলের জন্যে গর্বও দেখা যায়।
হাদির হত্যাকাণ্ড পুরো পরিবারকে ছারখার করে দিয়েছে। এক সংক্ষিপ্ত জীবনে সে যেন খুব তাড়াহুড়া করে অনেক কিছু অর্জন করে ফেলেছে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন জানি মনে হোল হত্যাকারী জানে না সে আসলে হাদিকে শারীরিকভাবে হত্যা করলেও তাকে শেষ করে দিতে পারেনি। রাবেয়ার দৃঢ়তা, মায়ের দোয়া, ছোট ছেলের ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা এক সময় আবার নতুন হাদি সামনে এসে দাঁড়াবে। রাবেয়ার শুধু একটি চাওয়া, হাদির হত্যাকারীর বিচার এবং শাস্তি যেন অবশ্যই হয়।
হাদির মৃত্যু তরুণদের মধ্যে ভীতি নয়, স্বপ্ন তৈরি করছে। এক এক জনের নতুন হাদি হবার স্বপ্ন। নজরুল হবার স্বপ্ন। যাকে হাদি এত ভালোবেসেছিল।