ভারতের উপদেশ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য, এ ধরনের নসিহতের প্রয়োজন নেই: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচন বিষয়ে ভারতের উপদেশ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং এখন এ ধরনের নসিহতের প্রয়োজন নেই। তিনি জানান, বাংলাদেশ সামনে একটি ভালো নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে একই দিন ভারতীয় সময় দুপুরে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে তলব করে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
হাইকমিশনারকে তলবের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে আসছে ভারত। পাশাপাশি বাংলাদেশে অবনতির দিকে থাকা নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
আরও পড়ুন: চার ঘণ্টায়ও শেষ হলো না পে-স্কেলের রুদ্ধদ্বার বৈঠক
এ প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, গত ১৫ বছরে নির্বাচন নিয়ে ভারতের এমন বক্তব্য দেখা যায়নি। এখন তাদের দেওয়া নসিহত বাংলাদেশ মেনে নিতে চায় না। তিনি আরও বলেন, ভারত চাইলে শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়া থামাতে পারে। শেখ হাসিনা ভারতে বসে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়ে পাশের দেশে বসেই বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতার আলোকে বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন মিশন ও পোস্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে ভারত। এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ভারতীয় হাইকমিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। যেহেতু একটি কর্মসূচি ছিল, তাই সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের বিজয় দিবসে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি পোস্ট নিয়েও মঙ্গলবার বিতর্ক হয়। এ প্রসঙ্গে তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারত সবসময়ই মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের ভূমিকা খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করে। তিনি উল্লেখ করেন, নয় মাস না হলেও ছয় মাস থেকে ভারত পুরোপুরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে, তবে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা ছাড়া ভারত এত দ্রুত বিজয় অর্জন করতে পারত না।
হাইকমিশনার তলব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি অপ্রত্যাশিত নয় এবং সচরাচরই এমনটা হয়ে থাকে। বাংলাদেশও এর আগে তলব করেছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের শুরু থেকেই ভারতের সঙ্গে এক ধরনের টানাপোড়েন ছিল বলে উল্লেখ করে তিনি জানান, সে কারণেই বাংলাদেশ ‘গুড ওয়ার্কিং রিলেশন’ চেয়েছিল।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত তারেক রহমান কোনো ট্রাভেল ডকুমেন্ট চাননি। তিনি পাসপোর্ট নিয়ে দেশে এলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্যই তা জানতে পারবে।