পে-স্কেলের সর্বশেষ অগ্রগতি জানাল পে-কমিশন
নবম পে-স্কেল নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন থেকে প্রাপ্ত মতামতগুলো চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে জাতীয় বেতন কমিশন (পে-কমিশন)। তবে এখনো সম্পূর্ণ প্রতিবেদন লেখার কাজ করা যায়নি বলে জানিয়েছে পে-কমিশন।
সোমবার কমিশনের একটি সূত্র দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছে, কর্মচারীদের সাম্প্রতিক মহাসমাবেশ কিংবা আগামীকাল থেকে কঠোর কর্মসূচি—কোনো কিছুতেই বিচলিত নন তারা। বাস্তব সম্মত একটি সুপারিশ প্রস্তুতির দিকে মনোযোগ দিয়েছে কমিশন। এজন্য প্রতিটি সংস্থা, দপ্তর এবং সংগঠন থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাব গভীরভাবে পর্যালোচনা করে লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম শেষ হতে আরও সময় লাগবে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘কর্মচারীরা আন্দোলন করতে পারে। আন্দোলন ঠেকানো কিংবা আশ্বাস দেওয়া কমিশনের কাজ নয়। কমিশন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের সুপারিশ প্রণয়ন নিয়ে কাজ করছে।’
নবম পে-স্কেলের প্রতিবেদন জমা দিতে কতদিন সময় লাগতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কমিশনের রিপোর্ট প্রস্তুত হয়ে গেলে আপনারা (সাংবাদিক) কোনো না কোনো ভাবে সবুজ সংকেত পেয়ে যাবেন। তখন কমিশনের চেয়ারম্যান বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন।’
এদিকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিলেও সম্প্রতি সচিবালয়ে আন্দোলনকারীদের দমন প্রক্রিয়া ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন পরবর্তী সরাকারি সিদ্ধান্তে একরকম ভীত পে স্কেলের দাবিতে আন্দোলনরত বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। সেজন্য আপাতত কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছেন না তারা। মূলত সরকারি সিদ্ধান্ত ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের বক্তব্যে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হচ্ছে তাদের।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জিয়াউল হক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, অবশ্যই আমরা দাবি পেশ করবো, তবে সব দাবি রাস্তায় আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় হয় না। এক্ষেত্রে পে স্কেলের দাবিতে আমরা আলোচনার মাধ্যমে আদায় করতে চাইছি। পাশাপাশি সচিবালয়ের ভেতরে সম্প্রতি অপ্রীতিকর ঘটনায় বাইরের কর্মচারীরা সচিবালয়ের কর্মচারীদের ওপর ক্ষুব্ধ। সব বিষয় বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব বেল্লাল হোসেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা অর্থ উপদেষ্টা সালেহ আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছি। উনার সঙ্গে দেখা করতে আমরা অপেক্ষা করছি। আগামী বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) আমরা দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ আলচনায় বসবো। সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তবে সরকারি চাকরিজীবী বিধিমালা ও শৃঙ্খলা বহির্ভূত কোন কর্মসূচি দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের মুখ সমন্বয়ক ওয়ারেছ আলী। দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে ইচ্ছেমতো কর্মসূচি আমরা দিতে পারি না। আমরা চাকরির বিধিমালা ও শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে কর্মসূচি দেবো। বিধিমালা বহির্ভূত কোন কর্মসূচি দেয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো প্রণয়নের লক্ষ্যে গত জুলাই মাসে কমিশন গঠন করে দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। ওই কমিশনের ছয় মাসের মধ্যে সুপারিশ জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে কর্মচারীদের দাবি ডিসেম্বরের ১৫ তারিখের মধ্যেই নতুন পে স্কেলের গেজেট প্রকাশ করতে হবে।