৭৯৩ মণ্ডপে অসুরের মুখে দাড়ি লাগিয়ে বিভেদের চেষ্টা চলছিল: উপদেষ্টা
ফ্যাসিস্ট ও তাদের সহযোগীরা কয়েটি পূজামণ্ডপে অসুরের মুখে দাঁড়ি লাগিয়ে ধর্মীয় বিভেদ এবং সাম্প্রদায়িক উস্কানি ও সহিংসতা সৃষ্টির পায়তারা করেছিল বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেছেন, ‘এ ঘটনায় কিছু ফ্যাসিস্ট বুদ্ধিজীবীরও ইন্ধন ছিল। তাদের সে ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ এবং উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে।’
৭৯৩টি মণ্ডপে এমন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে জিডি করা হয়েছে, তদন্ত চলছে। কিছু ক্ষেত্রে শনাক্ত করা গেছে। কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। ঘটনার বিষয়টি ধর্মীয় নেতাদের জানানো হয়েছে। তারা এ বিষয়ে সহযোগিতা করেছেন। সিসি ক্যামেরা অনেক মণ্ডপে ছিল।’
আজ রবিবার (৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে কোর কমিটির মিটিং শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা বলেন। সভায় সারা দেশ ও পার্বত্য অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, দুর্গাপূজা, রাকসু ও চাকসু নির্বাচন, জাতীয় সংসদ নির্বাচ, চুরি-ছিনতাই-চাঁদাবাজি, মাদক, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও হাতিয়ার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করা হয়।
নর্থ সাউথ শিক্ষার্থী কোরআন অবমাননার অভিযোগে আটকের ঘটনায় এসবের যোগসূত্র আছে কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা নিয়ে এখনও অনুসন্ধান শেষ হয়নি। এ জন্য যোগসূত্র আছে কিনা, বলতে পারব না।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ধর্ষণের অভিযোগ তুলে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করা এবং শারদীয় দুর্গাপূজার মণ্ডপে অশুরের মুখে দাঁড়ি লাগিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চক্রান্তের পেছনে ফ্যাসিবাদের দোসরদের মদদ রয়েছে, যা ইতিমধ্যে প্রতীয়মান হয়েছে। একটি পার্শ্ববর্তী দেশ দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরির সময় আমাদের প্রধান উপদেষ্টাকে যেভাবে নিন্দনীয়ভাবে উপস্থাপনের সংবাদ পাওয়া গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অসুরের মধ্যে দাঁড়ি দেওয়ার কাজটিতেও তারই যোগসূত্র দেখা যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা, গোয়েন্দা সংস্থার কড়া নজরদারি, পূজা উদযাপন কমিটি এবং আপনাদের (সাংবাদিক) সহযোগিতায় কুচক্রীদের চক্রান্ত নস্যাত করতে সক্ষম হয়েছি।’
আরও পড়ুন: এনটিআরসিএর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগ হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যে ধর্ষণের ঘটনায় তুলকালাম কাণ্ড হয়েছে, মেডিকেল রিপোর্টে সে ধর্ষণের কোনও আলামতই পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পাহাড়ের সাধারণ জনগণের সহযোগিতায় এ ঘটনা সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। ইতিমধ্যে অবরোধ ও ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে।’
অন্তবর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ হয়ে ভারতের ওপর দায় চাপাচ্ছে, দেশটির সরকারের এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘এক্ষেত্রে আপানারা কাকে দোষ চাপাচ্ছেন? এগুলো তো আপনারা দেখছেন। তারা কী বলল, এটা না। উনাদের উদ্ধৃতি আমাদের জন্য কিছু না।’
পার্শ্ববর্তী দেশ কি চায় না বাংলাদেশ স্থিতিশীল থাকুক বা তারা কি নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে চায় কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অনুসন্ধান করে দেখে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব।’