রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টার ৭ প্রস্তাব
মিয়ানমার থেকে উদ্ভূত রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান শুধুমাত্র মিয়ানমারেই সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, সংকটটির উৎস মিয়ানমারেই, তাই এর সমাধানও মিয়ানমারের দিক থেকে আসা উচিত।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে আয়োজিত রোহিঙ্গা সংকটের উপর উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে তিনি এ বিষয়ে তার বক্তব্য করেন। এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানে ৭টি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকটের মূল উৎপত্তি মিয়ানমার থেকে, তাই এর স্থায়ী সমাধান সেখানেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই মিয়ানমার এবং আরাকান সেনাবাহিনীর ওপর চাপ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। সেইসঙ্গে রাখাইনে তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
আরও পড়ুন: চবিতে শিক্ষক নিয়োগে ‘স্বজনপ্রীতি’, দুদকে অভিযোগ ১০ শিক্ষার্থীর
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে এমন কিছু প্রস্তাব তিনি উল্লেখ করেন। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- রাখাইনে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করা, মিয়ানমার এবং আরাকান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করা এবং বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং রাখাইন অঞ্চলে স্থিতিশীলতা আনতে আন্তর্জাতিক সমর্থন সংগ্রহ এবং সেখানে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
এছাড়াও রাখাইন অঞ্চলের সমাজে রোহিঙ্গাদের পুনঃঅন্তর্ভুক্তির জন্য সহায়ক পদক্ষেপ গ্রহণ করা, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে তহবিল সংগ্রহের জন্য দাতা দেশগুলোর সমন্বয় করা, আন্তর্জাতিক বিচার এবং পুনরুদ্ধারমূলক ন্যায়বিচারের মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, মাদকদ্রব্য এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশ্ব আর বেশি সময় অপেক্ষা করতে পারে না। রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে এখনই উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ এই সংকট সমাধানে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে আয়োজিত রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ক আঞ্চলিক সম্মেলনেও অধ্যাপক ইউনূস ৭ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিলেন। যা ওই সময়ে ব্যাপক গুরুত্ব পায়।