১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:৪৯

সৌদি আরব-পাকিস্তান যৌথ প্রতিরক্ষা চুক্তি, প্রতিক্রিয়া দেখালেন আইন উপদেষ্টা

উপদেষ্টা আসিফ নজরুল  © সংগৃহীত

কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে পাকিস্তান ও সৌদি আরব। এর মাধ্যমে দেশ দুইটির কোনো একটির বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালানো হলে, তাকে উভয় দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে বিবেচনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসলামাবাদ ও রিয়াদ। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সৌদি সফরের সময় এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সফরকালে আল-ইয়ামামা প্রাসাদে তাকে স্বাগত জানান সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান। 

পরে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভ্রাতৃত্ব, ইসলামি সংহতি ও অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থের ভিত্তিতে এবং প্রায় আট দশকের দীর্ঘ অংশীদারিত্বের ওপর দাঁড়িয়ে দুই পক্ষ কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।’

মুসলিমপ্রধান দেশ দুইটির মধ্যে স্বাক্ষরিত এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে তিনি লিখেছেন, ‘সৌদি আরব এর সাথে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়েছে। এখন থেকে সৌদি আরব বা পাকিস্তান আক্রান্ত হলে সেটাকে দুই দেশ নিজেদের ওপর ‘আগ্রাসন’ হিসেবে দেখবে। দুই দেশ এক সঙ্গে হামলার জবাব দেবে। আলহামদুলিল্লাহ! আসলে এমন চুক্তি ছাড়া মুসলিম দেশগুলোর আর কোন উপায় নেই।’

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো দখলদার ইসরায়েল বাহিনী সম্প্রতি কাতারে হামলার পর বিশেষ বৈঠকের মাধ্যমে এক টেবিলে বসেন আরব লীগ, অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)-এর প্রায় ৬০টি সদস্য রাষ্ট্র। দোহায় অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে অংশ নিয়ে কাতারে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা করে কাতার ও ফিলিস্তিনের প্রতি অবিচল সমর্থন জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

উপদেষ্টা বলেন, ‘কাতারের সার্বভৌম ভূখণ্ডে বিনা প্ররোচনায় ও অযৌক্তিক ইসরায়েলি হামলা শুধু কাতারের ওপর হামলা নয়, বরং সমগ্র মুসলিম উম্মাহর মর্যাদার অবমাননা। বাংলাদেশ এই আগ্রাসনকে ইসরায়েলের বেপরোয়া অভিযানের অংশ হিসেবে দেখছে, যারা জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক মানবিক আইন এবং প্রতিনিয়ত জাতিসংঘের প্রস্তাব উপেক্ষা করে চলেছে’।

পাকিস্তান ও সৌদি আরবের স্বাক্ষরিত চুক্তি নিয়ে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, এ চুক্তিতে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা সম্পর্ক জোরদার, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তিতে অবদান রাখার যৌথ অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত হয়েছে। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা আরও উন্নত করা এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ শক্তিশালী করাই এর লক্ষ্য। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, ‘যে কোনো এক দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন মানেই উভয় দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন।’

বিশেষজ্ঞরা এ চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন অগ্রগতি’ বলে অভিহিত করেছেন। তারা বলছেন, এ পদক্ষেপ শুধু পাকিস্তান–সৌদি সম্পর্ককেই দৃঢ় করছে না, বরং দক্ষিণ এশিয়া ও মুসলিম বিশ্বের জন্যও এর গুরুত্ব রয়েছে। এতে পাকিস্তানকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার সবচেয়ে সক্ষম মুসলিম শক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের প্রতিক্রিয়াতেও সেই আভাস পাওয়া গেছে। তার দেয়া পোস্টের নিচে অনেকে মন্তব্য করেছেন, ‘বাংলাদেশেরও এমন চুক্তি করা উচিত।’