০৯ জুন ২০২৫, ১৫:৪৭

চামড়ার মান রক্ষায় ৮৬ হাজার কসাইকে আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন  © টিডিসি ফটো

চামড়া শিল্পের গুণগত মান নিশ্চিত করে আন্তর্জাতিক বাজারে দেশের অবস্থান সুদৃঢ় করতে বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার—এ কথা জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, এবারের কোরবানির মৌসুমে কাঁচা চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণের লক্ষ্যে ৮৬ হাজার কসাইকে আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বিনামূল্যে ৭ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন লবণ সরবরাহ করা হয়েছে, যাতে চামড়ার গুণমান ঠিক থাকে এবং তা নষ্ট না হয়।

আজ সোমবার (৯ জুন) দুপুরে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নূরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭০ বছর পূর্তি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, চামড়া খাতকে টিকিয়ে রাখতে এবং কোরবানির মৌসুমে সরবরাহচক্রে স্থিতিশীলতা আনতে সরকার ঈদের আগেই ২১৫ কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছে। এতে বোঝা যায়, এই খাতকে কতটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শেখ বশির উদ্দিন আরও জানান, বিশ্ববাজারে চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ওয়েট ব্লু এবং সাদা চামড়া রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই জনগণ যদি চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে, তবে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও বেশি দাম পাওয়া সম্ভব।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু সংবাদমাধ্যমে কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে ‘ভিত্তিহীন অপপ্রচার’ ছড়ানোর অভিযোগ করে তিনি বলেন, কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে লবণের অপর্যাপ্ত ব্যবহারে চামড়া নষ্ট করছে। ফলে এসব চামড়ার আর কোনো আর্থিক মূল্য থাকছে না। অথচ বিষয়টি গুজবের মাধ্যমে চামড়া খাতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চলছে।

এর আগে আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ বশির উদ্দিন বলেন, এক সময় আমাদের সমাজ, প্রতিষ্ঠান ও মূল্যবোধকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের অপচেষ্টা হয়েছিল। শিক্ষা থেকে শুরু করে বিচার পর্যন্ত সর্বত্র অস্থিরতা তৈরি করে জাতিকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বায়তুল মোকাররমের মতো পবিত্র স্থানও তখন নিরাপদ ছিল না। এমনকি খতিবকেও সেদিন পালিয়ে যেতে হয়েছিল। আজ যারা সেই অন্ধকার সময়ের নেতৃত্ব দিয়েছিল, তারা কেউ জেলে, কেউ দেশছাড়া। আর যারা অবমূল্যায়িত ছিলেন, তারা আজ মর্যাদার আসনে।

অনুষ্ঠান শেষে বিদ্যালয় চত্বরে একটি ফলজ বৃক্ষের চারা রোপণ করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত দিনব্যাপী মিলনমেলায় প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলন, স্মৃতিচারণ, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও ঐতিহাসিক নানা প্রাপ্তির গল্পে মুখর হয়ে ওঠে নূরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী সিদ্দিক জোবায়ের, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ফিরোজ আহমেদ, খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল হক, যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোসাম্মদ আসমা বেগম, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম এবং রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী আব্দুল মজিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামীম হোসেন।