সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্ত্রীর প্লট-ফ্ল্যাট জব্দ, ব্যাংক হিসাব-শেয়ার অবরুদ্ধ
দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খানের নামে থাকা রাজধানীর তেজগাঁওয়ের চারতলা ভবন, পুরোনো একটি ভবনসহ ১৬ শতক জমি, পল্লবীতে একটি ফ্ল্যাট, ছয়টি ব্যাংক হিসাব এবং দুটি কোম্পানির শেয়ার আদালতের নির্দেশে অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। আবেদনটি করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, লুৎফুল তাহমিনা খান জ্ঞাত আয়ের উৎস ছাড়াই প্রায় ১৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন, যা তিনি নিজে ভোগ দখলে রেখেছেন। এভাবে সম্পদ অর্জন করে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪–এর ২৭(১) ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, স্বামী আসাদুজ্জামান খান কামাল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাহমিনাকে এই অপরাধে সহায়তা করেছেন, যা দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অপরাধ।
আদালতে জমা দেওয়া তথ্যে জানানো হয়, রাজধানীর তেজগাঁওয়ের মনিপুরি পাড়ায় ৫ দশমিক ৫৭ কাঠা জমির ওপর নির্মিত চারতলা বাড়িটি ৩ হাজার ৪০০ বর্গফুট আয়তনের। একই এলাকায় তাহমিনার নামে আরও রয়েছে দুটি প্লট এবং একটি পুরোনো ভবন, যার আয়তন ৫ দশমিক ৭৬ শতক। এছাড়া তেজগাঁওয়েই আরও ১ দশমিক ৩৪ শতক জমি রয়েছে তাঁর নামে। পল্লবী এলাকায় রয়েছে ১ হাজার ৮৭২ বর্গফুট আয়তনের একটি ফ্ল্যাট।
এছাড়া লুৎফুল তাহমিনা খানের ছয়টি ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে ৭ কোটি ৫৮ লাখ ৩৩ হাজার ৪৩৬ টাকা। ওই হিসাবগুলো এবং দুটি কোম্পানির শেয়ারও আদালতের নির্দেশে অবরুদ্ধ করা হয়েছে।
দুদকের আবেদনে আরও বলা হয়, তাহমিনা খান তার নিজের নামে এবং আংশিক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে জ্ঞাত আয়ের উৎসবিহীন প্রায় ৪৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকার লেনদেন করেছেন। এসব অর্থের স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে তিনি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারার অপরাধ করেছেন। মামলার তদন্তকালে জানা গেছে, আসামিরা এই সম্পদ দ্রুত হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। তাই তদন্ত কার্যক্রম ও আদালতের রায় কার্যকর নিশ্চিত করতে আপাতত এসব সম্পদ অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন ছিল।