স্কুলে ভর্তি হতে না পেরে আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা, পথ আটকাল বিভাগীয় কমিশনারের
লটারিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও বয়সের জটিলতার কারণে জামালপুর জিলা স্কুলে ভর্তি হতে না পারা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা আন্দোলনে নেমেছেন। আজ মঙ্গলবার ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা একটি অনুষ্ঠানস্থলের ফটকে শুয়ে বিভাগীয় কমিশনারের পথ আটকে দেয়। এ সময় সেখানে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা।
দুপুর ১২টার দিকে জামালপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনের ফটকে এ ঘটনা ঘটে। পরে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. শফিকুর রেজা বিশ্বাস ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে সরে যায় শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, গত ২৫ নভেম্বর তৃতীয় শ্রেণিতে প্রভাতি ৫৯ জন ও দিবা শাখায় ৫৬ এবং ষষ্ঠ শ্রেণিতে প্রভাতি ৪৩ ও দিবা শাখায় ৫৩ ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন আহ্বান করা হয়। দুটি শ্রেণিতেই অনলাইনে লটারি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার কথা রয়েছে।
সেই অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর সারা দেশে একযোগে লটারি হয়। ওই লটারিতে উত্তীর্ণ তৃতীয় শ্রেণির প্রায় ৪০ ও ষষ্ঠ শ্রেণির প্রায় ৪০ জনের বয়সসংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়। নীতিমালা অনুযায়ী, এই শিক্ষার্থীদের বয়স কম। ফলে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের এখনো ভর্তি নেয়নি। এমন অবস্থায় ওই সব শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা আন্দোলন করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুর ১২টার দিকে জামালপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে চতুর্থ ও পঞ্চম ধাপের অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত এক বিশেষ সভা ছিল। ওই সভায় ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. শফিকুর রেজা বিশ্বাস প্রধান অতিথি ছিলেন। তার যাওয়ার খবরে লটারিতে উত্তীর্ণ হয়েও ভর্তি হতে না পারা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা সেখানে হাজির হন। শিক্ষার্থীরা প্রথমে শিল্পকলা একাডেমির প্রধান ফটকে শুয়ে পড়ে অবস্থান নেয়।
এতে অনুষ্ঠানস্থলে বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রবেশ করতে পারছিলেন না। পরে বিভাগীয় কমিশনার বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা পথ ছেড়ে দেয়। পরে ওই সভা শুরু হয়। কিন্তু শিল্পকলা একাডেমির সামনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা প্রায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
স্কুল সূত্রে জানা গেছে, ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হতে হলে শিক্ষার্থীর বয়স কমপক্ষে আট বছর বা তার বেশি হতে হবে। ষষ্ঠ শ্রেণির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বয়স হবে কমপক্ষে ১১ বছর।
কয়েকজন অভিভাবক বলেন, লটারিতে ভর্তির জন্য আবেদনের সময় কোনো ধরনের বয়সসীমার কথা উল্লেখ ছিল না। লটারিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পর এক মাস বা কয়েক দিন কম থাকার কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভর্তি নিচ্ছে না। অনেক শিক্ষার্থী আগের স্কুল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে চলে এসেছে। এখন যদি ভর্তি করা না হয়, তাহলে তারা কোথায় যাবে। এ ধরনের কোনো নীতিমালায় যদি থাকত, তাহলে আবেদনের সময়ই তাদের বাতিল করে দিত। তাহলে তো কোনো সমস্যা হতো না। এখন সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে, ভর্তির সময় বয়সসংক্রান্ত জটিলতার কথা বলে ভর্তি নিচ্ছে না। ভর্তি না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।
জামালপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) হালিমা খাতুন বলেন, এসব শিক্ষার্থী বয়সসীমার নীতিমালায় পড়ছে না। তাদের বয়স কম রয়েছে। তারপরও বিষয়টি নিয়ে ভর্তি কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।