জানুয়ারিতে এক কোটি ৬০ লাখ শিক্ষার্থী পাচ্ছে ইউনিক আইডি

শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে ইউনিক আইডি
শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে ইউনিক আইডি  © ফাইল ফটো

আগামী জানুয়ারিতে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির এক কোটি ৬০ লাখ দেওয়া হবে নতুন ইউনিক আইডি বা অভিন্ন পরিচয়পত্র। তবে দেশের নির্বাচিত কিছু উপজেলার শিক্ষার্থীরা ডিসেম্বরে এই কার্ড হাতে পাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র থেকে জানা গেছে, চলমান মুজিববর্ষ উপলক্ষে নির্ধারিত সময়ের এক মাস আগে অর্থ্যাৎ ডিসেম্বরে দেশের নির্বাচিত কিছু উপজেলার শিক্ষার্থীরা ইউনিট আইডি পাবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর থেকে শিক্ষার্থীদের রোল নম্বরের পরিবর্তে ইউনিক আইডি দেওয়ার পরিকল্পনা নেয় সরকার। এজন্য শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ শুরু করেন বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) অধীনে 'ইন্টিগ্রেটেড এডুকেশনাল ইনফরমেশন সিস্টেম' (আইইআইএমএস) প্রকল্পের কর্মকর্তারা। তারা প্রতি শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধনসহ মোট ১৫ ধরনের তথ্য সরবরাহ করতে অভিভাবকদের নির্দেশ দেন।

সূত্র থেকে আরও জানা যায়, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের রোল নম্বরের পরিবর্তে একটি ইউনিক আইডি নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীর নিজ নামের বানানের প্রথম বর্ণ অনুসারে নির্দিষ্ট ডিজিটের আইডি নম্বর দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে প্রাথমিকের ইউনিক আইডির প্রকল্প পরিচালক মো. মঞ্জুরুল আলম প্রধান জানিয়েছেন, প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি তৈরির জন্য বিদ্যালয় পর্যায়ে আগামী মাস থেকে সফটওয়্যারে ডাটা এন্ট্রি শুরু হবে। এজন্য সফটওয়্যার তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

ইউনিক আইডি প্রকল্প পরিচালক শামসুল আলম জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা কোন স্কুলে পড়ছে, ঝরে পড়ল কিনা? চাকরি পেল কিনা? ইত্যাদি যাবতীয় তথ্য ইউনিক আইডির মধ্যে সংরক্ষিত থাকবে। ইউনিক আইডির ফরমে যেসব তথ্য শিক্ষার্থীরা দিচ্ছেন, তা যেন কোনোভাবেই অন্যের হাতে না যায়, তা নিশ্চিতেও বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনি আরো জানিয়েছেন, ইউনিক আইডির তথ্য ফরম পূরণের কার্যক্রম আগামী ৩০ নভেম্বর শেষ হবে। এরপর ডাটা এন্ট্রি দেওয়া হবে। তথ্য সুরক্ষায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। আগামী বছরের শুরুতেই পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের হাতে ইউনিক আইডি তুলে দেওয়া সম্ভব হবে আমি আশাবাদী। তবে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ডিসেম্বরে কিছু উপজেলায় ইউনিক আইডি বিতরণের পরিকল্পনা করছি।

তথ্য সূত্রে জানা যায়, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মৌলিক ও শিক্ষা-সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এক জায়গায় রাখার জন্য ইউনিক আইডি তৈরি করা হচ্ছে। অফিস অব রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় বর্তমানে কোনো শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধন সম্পন্ন করছে। আর যারা ১৮ বছরের ওপরে, তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আছে। এই দুই স্তরে পরিচয় ও শনাক্তের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু মাঝখানে বাদ পড়ে যাচ্ছে প্রি-প্রাইমারি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। তাদের শনাক্তকরণের আওতায় আনার জন্যই ইউনিক আইডি তৈরি করা হচ্ছে।

এ বিষয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক জানান, রোল নম্বর প্রথা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা তৈরি করে। এতে গুণগত শিক্ষা অর্জনের অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। গুণগত শিক্ষা অর্জনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মনোভাব নয় বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহযোগিতামূলক মানসিকতা তৈরি করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে নম্বর প্রথার পরিবর্তে আইডি নম্বর ব্যবহার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে।


সর্বশেষ সংবাদ