দীর্ঘদিন পর স্কুলে ফিরে উচ্ছ্বাসিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবক
করোনায় দেড় বছর ধরে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালা। ফলে এক ধরণের ঘরবন্দী জীবনযাপন করছিলেন দেশের শিক্ষার্থীরা। অবশেষে সকল প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলায় উচ্ছ্বসিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অবিভাবক।
রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটা উপজেলার ডুগডুগিহাট ইসলামী প্রি-ক্যাডেট স্কুলে এমন উচ্ছ্বাস দেখা যায়।
দেড় বছর পরে স্কুলে আসতে পেরে কেমন অনুভূতি জানতে চাইলে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী শৈকত বলেন, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়িতে বসে খুবই খারাপ সময় যাচ্ছিল। শুরুর দিকে একটু ভাল সময় গেলেও পরবর্তী দিনগুলোতে খুবই বিরক্তকর হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এতোদিন পরে হলেও স্কুলে আসতে পেরে এখন খুবই আনন্দ হচ্ছে বলে জানায় এ শিক্ষার্থী।
আরেক শিক্ষার্থী এ্যানি বলেন, ১২ তারিখ স্কুল খুলবে শুনেই অনেক ভাল লাগছিল। বাসায় থাকতে থাকতে আর ভালো লাগে না । যাহোক আজ স্কুলে আসতে পেরেছি, তাই আমি অনেক খুশি।
এছাড়া দীর্ঘদিন পরে স্কুলে এসে আনন্দিত অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও। স্বাস্থবিধি মেনে নিয়মিত ক্লাস করতে আগ্রহী তারা।
করোনার মধ্যে এতোদিন পর সন্তান স্কুলে যাচ্ছে এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে অভিভাবক আব্দুল মান্নান বলেন, বাচ্চারা দীর্ঘদিন বাসায় থেকে বিরক্ত হয়ে উঠেছে। তাছাড়া গ্রাম পর্যায়ে এখন করোনার প্রকোপ তেমন নেই। সুতরাং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস করলে তেমন সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলে মনে করেন এই অভিভাবক।
স্কুলের শিক্ষক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, করোনার দীর্ঘ ছুটিতে একপ্রকার অলস সময় কাটতেছিল। কেমন জানি সবকিছু থাকার পরেও যাচ্ছিল নিরানন্দ একটা মূহুর্ত। আসলে শিক্ষকতা পেশাটা শিক্ষার্থীদের ঘিরেই, ফলে তাদের মাঝেই ভাললাগা, দুঃখ-কষ্ট ও আনন্দ খুঁজে পাই। অনেকদিন পর ভিন্নরূপে হলেও তাদের কাছে পেয়ে ভালো লাগা কাজ করছে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে আনন্দ বিনোদনের মাধ্যমে পড়াশোনা শুরু করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এ শিক্ষক।
দীর্ঘদিন পর স্কুলে এসে শিক্ষার্থী কতটা নিরাপদ জানতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. গোলাম সাকলায়েন বলেন, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। ক্লাসগুলোও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতির বিরূপ পাদুর্ভাবের ফলে ৫৪৪ দিন ধরে বন্ধ থাকার পর আজ খুলেছে দেশের মাধ্যমে ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।