বেতন নেই ১৩ মাস, বিপাকে বেসরকারি শিক্ষকরা
করোনা মহামারীর কারণে শিক্ষামন্ত্রলালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী গত বছরের মার্চ মাস থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারি অনুদান থাকলেও প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বেতন পাচ্ছেন না বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারিরা।
জানা যায়, চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলার প্রাথমিক পর্যায়ের ১৪ শতাধিক বেসরকারি শিক্ষক ১৩ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। করোনার প্রভাবে তাঁদের টিউশনিও বন্ধ। অর্থাভাবে পরিবার নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন দেশ গড়ার এই কারিগররা। সরকারের পক্ষ থেকে কোন অর্থ বা খাদ্যসহায়তা পাননি বেসরকারি শিক্ষকেরা।
শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, মতলব উত্তর উপজেলায় কিন্ডারগার্টেন ৯০টি। শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ৯০০। মতলব দক্ষিণ উপজেলায় কিন্ডারগার্টেন ৪৫টি। শিক্ষক-কর্মচারী পাঁচ শতাধিক।
মতলব দক্ষিণের স্ট্যান্ডার্ড ট্যালেন্ট একাডেমী নামের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক শামীম আহম্মেদ বলেন, ‘উপজেলা সদরে পরিবার নিয়ে একটি বাসা ভাড়া করে থাকি। করোনা শুরুর আগে যা বেতন পেতাম, তা দিয়ে এবং টিউশনির টাকা দিয়ে কোনো রকমে সংসারের খরচ জোগাতাম। গত মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ১৩ মাস ধরে বেতন পাইতাছি না। দু-চারটা টিউশনি যা করাতাম, করোনা ও লকডাউনের কারণে সেগুলোও বন্ধ।’ তিনি দুঃখ করে বলেন, অন্যের কাছে হাত পাতা তো আর সম্ভব নয়। এখন স্বজনদের কেউ ধারও দিতে চান না। পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। আর কয়েক দিন পরই ঈদ। গত দুই ঈদের মতো এবারও ঈদের কেনাকাটা করতে পারবেন না। বাধ্য হয়ে এখন শিক্ষকতা ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন তিনি।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফারুক আহম্মেদ একটি কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষকও। করোনা পরিস্থিতি শুরুর আগে তাঁর প্রতিষ্ঠান ভালোই চলছিল। টিউশন ফি ও অন্যান্য খাতের আয় দিয়ে ভালোমতোই শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দিতে পারতেন। এখন সবার মতো তিনিও আছেন বিপাকে।
ফারুক আহম্মেদ বলেন, শিক্ষক-কর্মচারীরা ১৩ মাস ধরে বেতনহীন। বাধ্য হয়ে অনেক শিক্ষক পেশা পরিবর্তনের কথা ভাবছেন। ঘরভাড়া দিতে না পেরে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে । এসব শিক্ষকদের সহায়তায় সরকার বা ব্যক্তি পর্যায়ে কেউই এগিয়ে আসছেন না।