২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৫:৫৯

অনলাইন শিক্ষার গুরুত্ব ও সীমাবদ্ধতা

অনলাইন শিক্ষা  © সংগৃহিত ছবি

করোনা ভাইরাসের প্রকোপে স্থবির গোটা বিশ্ব। রেহাই নেই সর্বস্তরের শিক্ষা ক্ষেত্রেও। লাকডাউনের কারণে শিক্ষা পরিস্থিতি আরও বেশি এলোমেলো হয়ে গেছে। গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড পরীক্ষাগুলোও থেমে গেছে। সব শিক্ষার্থীরা যে ঘরে বসে পড়াশুনা চালিয়ে যাবে তারও উপায় নেই। রয়েছে নানা সীমাবদ্ধতা।

তবে তথ্য প্রযুক্তির যুগে শিক্ষার গুণগত মানের উৎকর্ষ সাধনে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযাগ নেই। নিয়মিত নতুন নতুন প্রযুক্তির সংযাজন ঘটছে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে। যা ধাপে ধাপে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে । তেমনি প্রযুক্তির অন্যতম ক্ষেত্র অনলাইন শিক্ষা।

জাতির এ সংকটকালীন মূহুর্তে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পড়াশুনার যে গুরুত্ব বেড়ে গেছে তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। অনলাইন শিক্ষাব্যাবস্থা হল ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে প্রয়োজন হয় ডিজিটাল ডিভাইস মোবাইল, ল্যাপটপ এবং উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ।

সুতরাং একজন শিক্ষার্থী ইন্টারনেট নির্ভর এ পদ্ধতিকে ব্যবহার করে ঘরে বসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লাইভ ক্লাসে অংশগ্রহণ এবং মতবিনিময় করতে পারে। এ পদ্ধতিতে খাতায় নোট করার প্রয়োজন হয় না কারণ ক্লাসটি রেকর্ড করে পুনরায় শোনা যায়। এ পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম সক্রীয় রাখতে পারে।

দেশে ইতোমধ্যে অনলাইন শিক্ষার কার্যকক্রম চালু হলেও তা পুরোপুরি সফলতা লাভ করতে পারেনি। কারণ এটির বাস্তবায়নে রয়েছে নানা সীমাবদ্ধতা। এখানে ধনী-গরীব ও গ্রাম-শহর বিভেদ থেকেই গেছে। অনেকেরই অনলাইন শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ডিজিটাল ডিভাইস মোবাইল ও ল্যাপটপ নেই। অনেক  জায়গাতেই উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট সংযোগ নেই। ফলে অধিকাংশ শিক্ষার্থী এ অনলাইন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এ সম্পর্কে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী  রেদওয়ান রাকিব বলেন, ‘‘বর্তমানে লকডাউন নামক শব্দে আবদ্ধ আমরা। বন্ধ রয়েছে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এমতাবস্থায় পড়াশুনা চালিয়ে যেতে হলে অনলাইন শিক্ষা ছাড়া বিকল্প কোন মাধ্যম নেই। এখন প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উচ্চগতি সম্পন্ন ইন্টারনেট পরিসেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং যাদের স্মার্ট ফোন নেই তাদের সহজ শর্তে ঋণ দিতে হবে। যেহেতু আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের সপ্ন দেখি সেহেতু যেকোন মূল্যে এ অনলাইন শিক্ষার ব্যাবস্থা করতে হবে।’’

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মিঠুল মিয়া বলেন, ‘‘অনলাইন ক্লাসের জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইস ও ইন্টারনেট পরিসেবা নিশ্চিত না করতে পারলে এ হবে একটি বৈষম্যমূলক পাঠদান পদ্ধতি। প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের ভালো মানের ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় এতে তারা চরমভাবে বঞ্চিত হবে। এমনকি অনেকেরই ডাটা কেনার সামর্থ্যও নেই। এতে দেখা যাচ্ছে ৪০ শতাংশ ক্লাসে অ্যাটেন্ড হতে পারলেও ৬০ শতাংশই বঞ্চিত হচ্ছে যা মূলত বৈষম্য সৃষ্টি করবে।’’

নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে বর্তমানে দেশের  প্রায় সব কিছুই অনলাইন কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও সেই প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ প্রচেষ্টা তখনই বাস্তবায়ন হবে যখন সকল শিক্ষার্থীর কাছে অনলাইন ক্লাসের ডিভাইসগুলো সহজলভ্য হবে।