২১ অক্টোবর ২০১৯, ১৮:০৮

প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে আমরণ অনশনে নন-এমপিও শিক্ষকেরা

  © টিডিসি ফটো

সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রীর সাথে বৈঠকের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে আমরণ অনশন কর্মসূচীর ঘোষণা দিয়েছেন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা।

সোমবার (২১ অক্টোবর) এ দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন। ‘নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশন’ এর ব্যানারে তারা এ কর্মসূচীতে অংশ নেন। 

এ সময় তারা এমপিও নীতিমালা ২০১৮’র স্থগিত করে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্তির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের দাবি জানান।

এর আগে গতকাল (২০ অক্টোবর) শিক্ষামন্ত্রীর সাথে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়া তারা অনশন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হন বলে জানান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের সুনির্দিষ্ট তারিখ না পেলে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা।

অনশন কর্মসূচিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর বিভিন্ন অসঙ্গতি তুলে ধরে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, নীতিমালা ২০১৮ পরিশিষ্ট ‘খ’-এ  নিম্ন মাধ্যমিক (৬ষ্ঠ-৮ম) শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ১৫০জন। কিন্তু ‘খ’ এ  নিম্ন মাধ্যমিক (৬ষ্ঠ-৮ম) শ্রেণী পর্যন্ত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও ফলাফল চাওয়া হয়নি। তাহলে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো কোন মানদন্ডে এমপিও করা হবে বিষয়টি আমাদের নিকট স্পষ্ট নয়।

তারা বলেন, পরিশিষ্ট ‘ক’ এ (৬ষ্ঠ-১০ম) শ্রেণী পর্যন্ত সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে শহর পর্যায়ে ৩০০ জন এবং মফস্বলে ২০০ জন। আবার বালিকা বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে শহরে ২০০ জন মফ্স্বলে ১০০ জন কিন্তু পরিশিষ্ট ‘খ’ এ উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্য পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৪০ জন। যদি ২০০ জনে ৪০ জন পরীক্ষার্থী হয় সে অনুযায়ী আনুপাতিক হারে ১৫০ জনে ২৬ জন এবং ১০০ জনে হতে হবে ১৩ জন।

আন্দোলনকারী এ শিক্ষক নেতারা বলেন, পরিশিষ্ট ‘খ’ কলেজ (উচ্চ-মাধ্যমিক) শহর সহশিক্ষায় (১১-১২) ২০০ জন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৬০ জন আবার নারীশিক্ষায় ১৫০ জন এ পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৬০ জন। ২০০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৬০ জন পরীক্ষার্থী চাওয়া হলে ১৫০ জনে ৪৫ জন হবে। মফস্বলে সহশিক্ষা ১৫০ জন শিক্ষার্থীতে পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৪০ জন। নারী শিক্ষায় ১২০ শিক্ষার্থীর মধ্যে চাওয়া হয়েছে ৪০ জন পরীক্ষার্থী। ১৫০ জন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ৪০ জন পরীক্ষার্থী হলে ১২০ জনের ক্ষেত্রে হবে ৩২ জন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, পরিশিষ্ট ‘খ’ স্নাতকে (১১-১৫) তে সহশিক্ষায় শহরে ২৫০ জন শিক্ষার্থীতে পরীক্ষার্থী ৬০ জন পরীক্ষার্থী কিন্তু এখানে  স্নাতক শিক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে ৫০ জন কিন্তু পরীক্ষার্থী ৬০ জন, যা সম্পূর্ণ অসংগতিপূর্ণ। আবার নারীশিক্ষার জন্য শিক্ষার্থী ১৫০ জনের ডিগ্রী স্তরে শিক্ষার্থী ৩০জন এর বিপরীতে ৪০জন পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে এবং এইচএসসি বিএম স্তরে প্রতি ট্রেডে শিক্ষার্থী ৩০ জনের বিপরীতে ৪০জন পরীক্ষার্থী চাওয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

তারা আরো বলেন, অনুরূপভাবে মাদরাসা, কারিগরি ও বিএম কলেজে উল্লেখিত সমস্যাগুলো ২০১৮ এমপিও নীতিমালায় বিদ্যমান। আমাদের জানামতে আবেদন চাওয়ার সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের জাতীয় হার ৭০% এর নিচে ছিল। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শুধুমাত্র স্তর এমপিও’র নামে শিক্ষক এমপিও’র পরিবর্তে প্রতিষ্ঠান এমপিও বলে চালিয়ে দেওয়ার অপকৌশল আমরা দেখতে পাচ্ছি।

এ সময় সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদক প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের আন্দোলন কর্মসূচীকে বেগবান করার লক্ষ্যে সকল নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে ঢাকায় এসে চলমান আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান।