শূন্য পদে বদলির প্রজ্ঞাপন জারিতে দেরি যে কারণে
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শূন্য বদলি চালু হতে করতে যাচ্ছে সরকার। বিপুল সংখ্যক শিক্ষককে অনলাইনে বদলির আওতায় আনা যাবে কি না তা যাচাই করতে বিলম্ব হওয়ায় বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করেনি মন্ত্রণালয়। মূলত বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত পেতে বিলম্ব হওয়ায় প্রজ্ঞাপন জারিতে দেরি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বেশ কিছু কারণে বেসরকারি শিক্ষকদের সর্বজনীন বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করা সম্ভব হয়নি। প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীকে বদলির আওতায় আনা খুব সহজ ব্যাপার নয়। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত পাওয়া গেছে। খুব দ্রুত শিক্ষকরা সুখবর পাবেন।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের বদলির আওতায় আনার প্রস্তাব করা হয়েছিল। তবে শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে পরবর্তীতে ইনডেক্সধারী সব শিক্ষককে বদলির আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সব শিক্ষককে আসলেই সফটওয়্যারের মাধ্যমে বদলি করা সম্ভব কি না সেটি যাচাই করতে সময় লাগায় শূন্য পদে বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারেনি সরকার।
ওই সূত্র আরও জানায়, আজ বুধবার সফটওয়্যারের মাধ্যমে বদলির বিষয়টি পর্যালোচনা করতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা আলোচনা করেছেন। আলোচনায় সব ইনডেক্সধারী শিক্ষককে সফটওয়্যারের মাধ্যমে বদলির আওতায় আনা সম্ভব বলে মতামত দিয়েছে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল।
জানা গেছে, ২০১৬ সাল থেকে এনটিআরসিএ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সুপারিশ করে আসছে। প্রথম গণবিজ্ঞপ্তিতে উপজেলাভিত্তিক শিক্ষক সুপারিশ করার ফলে নিজ উপজেলায় শূন্যপদ না থাকায় অনেক শিক্ষক বাধ্য হয়ে মাদরাসায় ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে মেরিট পজিশন অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষক সুপারিশ করা হয়েছিল।
এনটিআরসিএর নিয়োগ পরিপত্র অনুযায়ী, একজন ইনডেক্সধারী শিক্ষক যেকোনো বয়সে পরবর্তী যেকোনো গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের মাধ্যমে মেরিট পজিশন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে পারবেন। তাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে অনেক নিবন্ধনধারী শিক্ষক নিজ এলাকায় শূন্যপদ না থাকায় দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে আবেদন করে সুপারিশ পেয়েছেন। তবে পরবর্তী সময়ে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ নিয়োগ পরিপত্র ২০১৫-এর ৭ নম্বর অনুচ্ছেদ সাময়িক স্থগিত করার কারণে চতুর্থ ও পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীদের বদলি আবেদনের সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা সমস্যায় পড়েছেন। এ অবস্থায় দ্রুত শূন্য পদে বদলির প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানিয়েছেন তারা।