২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৮

বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-বিশ্ববিদ্যালয়ের অনীহা

বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন  © ফাইল ফটো

দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছে না বেশ কিছু সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা অফিস। ফলে প্রায় ৫৯ কোটি টাকা বিল বকেয়া পড়েছে। গত মার্চ মাস পর্যন্ত বকেয়া হওয়া ৫৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল এখনও পরিশোধ করেনি সরকারি হাইস্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ ও মাঠপর্যায়ের শিক্ষা অফিসগুলো। এরমধ্যে শুধু ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) গ্রাহক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-দপ্তরগুলোর বিল বকেয়া ৪১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।  

বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পেতে নানা তৎপরতা চালাচ্ছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খণিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাছে বিপুল পরিমাণের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পরে আছে। ফলে বিতরণ সংস্থা-কোম্পানিগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। 

সরকারি হাইস্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ ও মাঠপর্যায়ের শিক্ষক অফিসগুলোর কাছে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল বাবদ শুধু ডিপিডিসিই পাবে ৪১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। একই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ণ বোর্ড ৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড ৫০ লাখ টাকা, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ২ কোটি ১১ লাখ টাকা ও নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড ২ কোটি টাকার বেশি বকেয়া বিদ্যুৎ বিল বাবদ পাবে।

পাওনা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা অফিস ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশনা দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কাছে অনুরোধ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ, যা কিছুটা বিব্রত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বকেয়া বিল পরিশোধের বিষয়ে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে (ইউজিসি) বলেছে।

অপরদিকে সরকারি স্কুল-কলেজ ও শিক্ষা অফিসগুলোর বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা এসব তথ্য দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন : অক্টোবরে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নিতে চায় পিএসসি

সূত্রের দেওয়া তথ্য ও দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে থাকা নথি বিশ্লেষণ করে জানা যায়, সরকারি হাইস্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ ও মাঠপর্যায়ের শিক্ষক অফিসগুলোর কাছে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল বাবদ শুধু ডিপিডিসিই পাবে ৪১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

একই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ণ বোর্ড ৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড ৫০ লাখ টাকা, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি ২ কোটি ১১ লাখ টাকা ও নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড ২ কোটি টাকার বেশি বকেয়া বিদ্যুৎ বিল বাবদ পাবে।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সেবা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পসকে বলেন, বকেয়া বিদ্যুৎ বিল থাকার বিষয়টি বিদ্যুৎ বিভাগ আমাদের জানিয়েছে। তারা ছয়টি কোম্পানির কোনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-অফিসগুলোর কাছে কত টাকা পায়. সে হিসাব দিয়ে বকেয়া পরিশোধের ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়েছে। আমরা ইউজিসি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে এ বিষয়ে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। 

আরও পড়ুন : শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি দেখে বেরিয়ে পড়েন রিকশাচালক ইসমাইল, ফিরলেন লাশ হয়ে

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে বিপুল সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অফিস রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাও কম নয়। আর বিদ্যুৎ বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিতরণকারী সংস্থাগুলোর পাওনার হিসাব দিয়েছে। তবে কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা অফিস বিদ্যুৎ বিল দিতে চাচ্ছে না, সে সংক্রান্ত কোন তথ্য দেননি। সে তথ্য পাওয়া গেলে আমরা ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইন্ডিভিজ্যুয়ালি নির্দেশনা দিতে পারতাম। কিন্তু সে তথ্য না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা সবাইকে কমন নির্দেশনা দিয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা অফিসগুলো তা পরিশোধের ব্যবস্থা করবে। কোন কোন প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছে তা সপ্তাহখানেকের মধ্যে জানা যাবে। 

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কলেজ-প্রশাসন শাখার পরিচালক অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম সাধারণ প্রশাসন শাখার পরিচালক ও উপপরিচালককে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব দিয়েছেন। 

জানতে চাইলে অধিদপ্তরের সাধারণ প্রশাসন শাখার উপপরিচালক মো. শাহজাহান শুক্রবার সকালে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি সম্প্রতি এ পদে যোগদান করেছি। তাই বিষয়টি সম্পর্কে আমি এখনও ভালোভাবে জানি না।