জলবায়ু পরিবর্তনে শিক্ষা খাতে মারাত্মক প্রভাব
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের নানা প্রভাব পড়ছে প্রতিনিয়তই। পরিবেশগত বিপর্যয়ই শুধু নয়, শিক্ষার ওপরও মারাত্মক ও সরাসরি প্রভাব ফেলছে জলবায়ু পরিবর্তন। এক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক দেখিয়েছে ২০২২ সাল থেকে বিরুপ আবহাওয়ার কারণে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি শিক্ষার্থীর।
জলবায়ু পরিবর্তনের নানা প্রভাবে স্বল্প আয়ের দেশের শিশুরা মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে। এসব দেশে বিদ্যালয় বন্ধ ছিল গড়ে ১৮ দিন করে। প্রচণ্ড গরমের কারণে গত এপ্রিলে ফিলিপাইনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। বাংলাদেশেও গত এপ্রিলে তাপপ্রবাহে বেশ কয়েকটি জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১০ বছর বয়সী একজন শিশু ১০৭০ সালের সমবয়সী শিশুদের তুলনায় বন্যার সম্মুখীন হয়েছে প্রায় তিন গুণ বেশি, পাঁচ গুণ বেশি খরা ও ৩৬ গুণ বেশি তাপপ্রবাহের সম্মুখীন। তাই স্কুল খোলা থাকলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অনেক শিশু এখনো অনুপস্থিত। দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলের অতি দরিদ্র ৫০ শতাংশ পৌরসভার শিক্ষার্থী বছরের অর্ধেক সময় পড়াশোনার বাইরে থাকে।
বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মমতা মূর্তি বলেন, তরুণেরা সরাসরি প্রভাবিত হচ্ছেন জলবায়ু পরিবর্তনজনিত এই সংকটের কারণে। তারা কাজ করতে আগ্রহী। তবে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় তরুণেরা জলবায়ু প্রভাবিত বিশ্বে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য, দক্ষতা ও সুযোগ ব্যবহার করতে অপারগ হচ্ছেন। শিক্ষার শক্তিকে কাজে লাগানোর সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে তাদের কাছ থেকে।
অতি গুরুত্বপূর্ণ হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিতে অর্থায়নের দিকটি এখনো উপেক্ষিত বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে ।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, বরাদ্দকৃত অর্থের মাত্র দেড় শতাংশ শিক্ষাখাতে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীপ্রতি এককালীন মাত্র সাড়ে ১৮ মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো নির্মাণ, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য অভিযোজনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের ফেরানো যাবে।