ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি কি থমকে গেল?
শূন্য পদের বিপরীতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলির দাবিতে সম্মতি দিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এজন্য একটি খসড়া ও সফটওয়্যার তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপদেষ্টার নির্দেশনা অনুযায়ী বদলির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কাজও করছেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বদলির কার্যক্রম থমকে গেছে বলে খবর চাউর হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলির খসড়া নিয়ে কাজ করছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বেসরকারি মাধ্যমিক-৩ শাখা। পূর্বে এই শাখায় সিনিয়র সহকারী সচিব তৌহিদুর রহমান কাজ করতেন। বর্তমানে তিনি শিক্ষা উপদেষ্টার একান্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। বেসরকারি মাধ্যমিক-৩ শাখায় পদায়নকৃত উপসচিব সাইয়েদ এ. জেড. মোরশেদ আলী দেশের বাইরে থাকায় বদলির খসড়া তৈরিতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। তবে সাইয়েদ এ. জেড. মোরশেদ আলী দেশে ফেরার পর দ্রুত খসড়া তৈরির কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা আজ মঙ্গলবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, শিক্ষকদের বদলির খসড়া তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। খসড়া তৈরির পর সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে তা চূড়ান্ত করা হবে। বদলির কার্যক্রম থমকে যায়নি। কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি। বদলি হবে সার্বজনীন। ইনডেক্সধারী সব শিক্ষককে বদলির আওতায় আনা হবে। তবে এতে কিছুটা সময় লাগবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এদিকে বদলির কার্যক্রম থমকে যাওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছেন ‘ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী ঐক্য পরিষদের’ সভাপতি প্রভাষক মো. সরোয়ার। তিনি বলেন, একটি চক্র শিক্ষকদের ভালো চায় না। এই চক্রই ফেসবুকে বদলির কার্যক্রম বাতিল হওয়া নিয়ে খবর রটিয়েছে। যারা এ ধরনের খবর ছড়াচ্ছেন তারা শিক্ষকদের শত্রু, জাতির শত্রু।
এ শিক্ষক নেতা আরও বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের কারণে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি বদলি বাস্তবায়ন হয়নি। স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। শিক্ষকদের প্রাণের দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করছে। আমরা সরকারের কাছে আহবান জানাব, কোনো মহলের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে দ্রুত শিক্ষকদের বদলির নীতিমালা জারি করুন। অন্যথায় শিক্ষকরা আবারও রাস্তায় নেমে আসবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এনটিআরসিএ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সুপারিশ করে আসছে। প্রথম গণবিজ্ঞপ্তিতে উপজেলাভিত্তিক শিক্ষক সুপারিশ করার ফলে নিজ উপজেলায় শূন্য পদ না থাকায় অনেক শিক্ষক বাধ্য হয়ে মাদরাসায় ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে মেরিট পজিশন অনুযায়ী জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষক সুপারিশ করা হয়েছিল।
এনটিআরসিএর নিয়োগ পরিপত্র অনুযায়ী, একজন ইনডেক্সধারী শিক্ষক যেকোনো বয়সে পরবর্তী যেকোনো গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের মাধ্যমে মেরিট পজিশন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে পারবেন। তাই দ্বিতীয় ও তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে অনেক নিবন্ধনধারী শিক্ষক নিজ এলাকায় শূন্য পদ না থাকায় দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে আবেদন করে সুপারিশ পেয়েছেন। কিন্তু পরিপত্র ২০১৫ এর ৭নং অনুচ্ছেদ সাময়িক স্থগিত করায় চতুর্থ ও পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীদের আবেদনের সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়।