১৩ আগস্ট ২০২৪, ২৩:১৭

বদলি নীতিমালা সংস্কারের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের সাথে শিক্ষকদের সাক্ষাৎ   © সংগৃহীত

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পারস্পরিক বদলি নীতিমালা সংস্কার ও শূন্য পদের বিপরীতে অধিদপ্তর নির্বিশেষে বদলির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন "ইনডেক্সেরধারী শিক্ষকদের বদলি গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী ঐক্য পরিষদ।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। একই সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবি, অতিরিক্ত সচিব সিনিয়র সহকারী সচিব, এনটিআরসির চেয়ারম্যান, এনটিআরসির সচিব, ডাকসুর সাবেক ভিপি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কাছে স্মারকলিপি জমা ও সাক্ষাৎ করেছেন তারা।

"ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলি গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রভাষক মো. সরোয়ার, মাকসুদা আফরিন মুক্তা, সানাউল্লাহ ভূঁইয়া, এ কে আহাদ, শাহানারা সুলতানা, শাহানারা খাতুন, শামিমা সুলতানা ও মনিরুজ্জামান মিলনসহ আরো অনেকে এ স্মারকলিপি জমা দেন ও সংশ্লিষ্টদের সাথে দেখা করেন।

স্মারকলিপিতে তারা জানান, ২০১৬ সাল থেকে এনটিআরসিএ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করে আসছে। ১ম গণবিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা ভিত্তিক শিক্ষক সুপারিশ করার ফলে নিজ উপজেলায় শূন্য পদ না থাকায় অনেক শিক্ষক বাধ্য হয়ে মাদরাসায় ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়েছেন। ২য় ও ৩য় গণবিজ্ঞপ্তিতে মেরিট পজিশন অনুযায়ী শিক্ষক সুপারিশ করা হয়েছিল। এনটিআরসিএর নিয়োগ পরিপত্র ২০১৫ এর ৭ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একজন ইনডেক্সধারী শিক্ষক যে কোনো বয়সে পরবর্তী যে কোন গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের মাধ্যমে মেরিট পজিশন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতে পারবেন।

তাই ২য় ও ৩য় গণবিজ্ঞপ্তিতে অনেক নিবন্ধনধারী শিক্ষক নিজ এলাকায় পোষ্ট না থাকায় বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবার জন্য দেশের এক প্রাপ্ত থেকে অন্য প্রান্তে আবেদন করে সুপারিশ পেয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে নিয়োগ পরিপত্র ২০১৫ এর ৭নং অনুচ্ছেদ সাময়িক স্থগিত করায় ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে ইনডেক্সধারীদেরও আবেদনের সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ইনডেক্সধারীদের জীবনে বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে নারী শিক্ষকরা নিজ উপজেলা থেকে ৫০০-৮০০ কিলোমিটার দূর-দূরান্তে নিয়োগ পেয়ে চরম হতাশায় দিনাযাপন করেছেন।

ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা বলেন, ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতনে পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকা অসম্ভব। বাসা ভাড়া দিতেই বেতন শেষ হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে শিক্ষকদের কষ্টের কথা উপলব্ধি করতে পেরে সরকারের অধীনস্থ কর্মকর্তারা পারস্পারিক বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এ প্রজ্ঞাপন দিয়ে ১% শতাংশ শিক্ষকও উপকৃত হবে না। তাই এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী সমপদে শূন্যপদে বদলির প্রয়োজন। 

স্মারকলিপিতে বলা হয়,  মাদরাসা ও কারিগরির বদলির পরিচালনা করবে মাদরাসা ও কারিগরি অধিদপ্তর এবং স্কুল ও কলেজের বদলি পরিচালনা করবে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। অথচ সকলের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে এনটিআরসিএ। তাই বদলির নীতিমালা প্রণয়নে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের কাছে একই সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্কুল, কলেজ থেকে মাদরাসা ও কারিগরি এবং মাদরাসা ও কারিগরি থেকে স্কুল কলেজে শূণ্য পদের বিপরীতে বদলির ব্যবস্থা চালু করুন। তা না হলে বদলির ক্ষেত্রে বৈষম্য থেকে যাবে এবং নিজ জেলায় পদ পাওয়া কষ্টকর হয়ে যাবে।

শিক্ষকরা জানান, ইতিমধ্যে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পারস্পারিক বদলির প্রজ্ঞাপন দিয়ে দিয়েছেন, যা দিয়ে ১% শিক্ষকও বদলি হতে পারবে না। বরং বৈষম্য থেকে যাবে। কিন্তু অন্তবর্তীকালীন সরকারের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা যে, কোন ক্ষেত্রে বৈষম্য রাখা যাবে না। কিন্তু বদলির ক্ষেত্রে অধিদপ্তর আলাদা করলে শিক্ষকদের সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট থেকেই যাবে ও বৈষম্য সৃষ্টি হবে।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, এ অবস্থায় এনটিআরসিএর মাধ্যমে সনদপ্রাপ্ত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের সকল বৈষম্য দূর করে মাদরাসা ও কারিগরি থেকে স্কুল-কলেজ এবং স্কুল-কলেজ থেকে মাদরাসা ও কারিগরিতে যাওয়ার জন্য একই সফটয়্যারের মাধ্যমে দ্রুত বদলির ব্যবস্থা চালু করলে শিক্ষক সংকট দূর হবে এবং আমাদের পরিবারের কাছাকাছি যাওয়ার ব্যবস্থা হবে। এর ফলে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা দূর হবে।