অবসরে প্রিয় শিক্ষক, গাড়িতে বসিয়ে রশি টেনে বিদায় শিক্ষার্থীদের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৪, ০৯:৪৪ AM , আপডেট: ০৭ জুন ২০২৪, ০৯:৪৪ AM
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কাশেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোছা. মাছুমা বেগম। দীর্ঘ ৩৪ বছরের শিক্ষা জীবনে শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো স্নেহ মমতায় বড় করে তুলেছেন। তাই প্রিয় শিক্ষকের চাকরি জীবনের শেষ কর্মদিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে ভোলেননি তারা। ছাত্র-ছাত্রীরা মাছুমা বেগমকে বিদায় জানাতে গলায় পুষ্প মাল্য, সঙ্গে সম্মাননা স্মারকসহ নানা উপহার দিয়ে শিক্ষিকাকে বেলুনে সাজানো গাড়িতে তুলে পৌঁছে দেয় তার বাড়িতে।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেলে উপজেলার ঝলই শালশিড়ি ইউনিয়নের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কাশেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ও ম্যানেজিং কমিটি সহকারী শিক্ষক মোছা. মাছুমা বেগমকে বিদায় জানাতে বিশেষ এ আয়োজন করে।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কাশেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফেরদৌসী আক্তার গণমাধ্যমকে বলে, ‘ম্যাডাম আমাদের অনেক যত্নসহকারে পড়াতেন। পড়ার ফাঁকে ম্যাডামের সঙ্গে আমরা অনেক মজা করতাম, সময় কাটাতাম। আজ ম্যাডামের বিদায় হচ্ছে। খুব খারাপ লাগছে।’
এদিকে এই শিক্ষিকার বিদায়ের কথা শুনে বিদ্যালয়ে ছুটে আসা সাবেক শিক্ষার্থী উম্মে কুলসুম ও সাহেদা আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা এই বিদ্যালয় থেকে পাশ করে মাধ্যমিক শেষ করে কলেজে পড়াশোনা করছি। আমরা যে সময় বিদ্যালয়ে পড়তাম সে সময় থেকে ম্যাডামকে দেখে আসছি। প্রতিদিন সকালে ম্যাডামকে বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ে আসতে দেখতাম। তবে আজ থেকে আর ম্যাডামকে বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসতে দেখা যাবে না। খবর পেলাম আজ বিদ্যালয় থেকে তিনি বিদায় নিচ্ছেন। তাই আমরা খবর পেয়ে ম্যাডামকে সম্মান জানাতে বান্ধবীরা মিলে বিদ্যালয়ে ছুটে আসি।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহিন আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দিনটিকে স্মরণ করে রাখতে আমরা ম্যানেজিং কমিটিসহ এই আয়োজন করেছি। দীর্ঘ চাকরি জীবনে তিনি আমাদের পরিবারের একজন সদস্য হয়ে গেছেন। যেহেতু চাকরির বয়স শেষ তাই তাকে বিদায় দিতে আমরা বাধ্য হয়েছি। একটা সময় আমাদেরও বিদায় নিতে হবে। আমরা দোয়া করি তিনি যেখানে থাকন, সব সময় ভালো থাকুন।’
চাকরি জীবনের শেষ দিনে সবার এমন ভালোবাসা পেয়ে আপ্লুত বিদায়ী শিক্ষিকা মোছা. মাছুমা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসছি। কিন্তু চাকরির বয়সসীমা অনুযায়ী আজ বিদায় নিতে হচ্ছে। খুব খারাপ লাগছে, এতদিনের একটি পরিবার থেকে আমাকে বিদায় নিতে হচ্ছে। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সবাই যেন ভালো থাকে সব সময় এই দোয়া করি।’