‘নতুন কারিকুলাম সন্তানদের শিক্ষার ভিত নষ্ট করে দিচ্ছে’
নতুন যে কারিকুলাম চালু করা হয়েছে, তাতে আমাদের সন্তানদের শিক্ষার ভিত নষ্ট করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। সদ্য প্রণীত শিক্ষা কারিকুলাম সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন অভিভাবকরা। সম্মিলিত অভিভাবক ফোরামের উদ্যোগে শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়।
এতে বক্তারা বলেন, নতুন যে কারিকুলাম চালু করা হয়েছে, তাতে আমাদের সন্তানদের শিক্ষার ভিত নষ্ট করে দিচ্ছে। যেখানে শিক্ষকরা নিজেরা পাঠ্যক্রম ভালো করে বুঝতে পারেন না, সেখানে ছাত্রছাত্রীদের কি পাঠদান করবেন তারা? প্রথমে কাঠামো তৈরি করে তারপর কয়েকটি বিষয়ের ওপর এই পদ্ধতি চালু করা উচিত ছিল।
তারা আরও বলেন, ‘মেধা মূল্যায়নের বিষয়ে অবশ্যই কর্তৃপক্ষকে সতর্ক হওয়া উচিৎ ছিল। যেখানে পরীক্ষার জন্য বাচ্চারা বই পড়তে চায় না, সেখানে পরীক্ষাহীন লেখাপড়ায় বইয়ের সঙ্গে কি করে সম্পর্ক রাখবে তারা। বাচ্চারা এখন মোবাইল, ট্যাব ও কম্পিউটার নিয়ে ব্যস্ত থাকে। শিক্ষকরা ইন্টারনেট থেকে সব লিখে নিতে বলেন। যেখানে সারা বিশ্ব ডিভাইস থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখার চেষ্টা করছে, সেখানে আমরা উৎসাহিত করছি। ডিভাইস আশক্তি এমন একটি বিষয়, যা ড্রাগের চেয়েও ভয়ংকর।’
এসময় অভিভাবকরা বলেন, ‘নম্বরের ভিত্তিতে মেধা যাচাই করা আমাদের এই অঞ্চলের দেশগুলোর একটি অন্যতম বিষয়। সেখানে ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বৃত্ত নিয়ে আমরা মেধা যাচাই করছি। পৃথিবীতে কোনো দেশের সুস্থ মানসিকতার কাউকে এই পদ্ধতি দিয়ে চিহ্নিত করা যায় না। এটা আমাদের বিকৃত শিক্ষাব্যবস্থা।
তারা অভিযোগ করে বলেন, ব্যবহারিক নামক এক ধরনের যন্ত্রণা চালু করা হয়েছে, যে কারণে প্রতিটি অভিভাবককে নরকে জ্বলতে হচ্ছে। বাসা থেকে গাছ লাগানো, টব বানানো, পুতুল বানানোসহ আরও অনেক কিছু করে নিতে হয় বাচ্চাদের। এগুলো মূলত বাচ্চাদের মায়েরা করে দেন। এই প্রকৃতির ব্যবহারিক কাজ কোনো উপকারে আসবে না। তাই সব ব্যবহারিক কাজ স্কুল থেকে সম্পূর্ণ দূর করতে হবে। যে কোনো নতুন কারিকুলাম হঠাৎ করে বাচ্চাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার আগে অবশ্যই শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল।’
মানববন্ধনে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক তাহেরা আক্তার রুপা, সদস্য সচিব অলক রায়, মুখপাত্র আমিরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।