ফিটনেস ঠিক রাখতে মেসির ‘ফাইভ পিলার রুল’, কী কী থাকে ডায়েটে?
ফুটবল বিশ্বের অন্যতম সেরা তারকা লিওনেল মেসি মাঠের খেলায় যেমন জাদুকরী, তেমনি তার সাফল্যের নেপথ্যে বড় ভূমিকা রাখে নিখুঁত ফিটনেস ও শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপন। দীর্ঘ সময় নিজেকে সেরা পর্যায়ে ধরে রাখতে মেসি অনুসরণ করেন ‘ফাইভ পিলার রুল’—যার মূল কথা একটাই, কঠোর ডিসিপ্লিন। এই শৃঙ্খলার যাত্রা একদিনে শুরু হয়নি। বার্সেলোনার লা মাসিয়া অ্যাকাডেমিতে কিশোর বয়সেই এর ভিত্তি গড়ে ওঠে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যা আরও পরিণত ও কঠোর হয়েছে। শরীরকে সুরক্ষিত রাখা, চোটের ঝুঁকি কমানো এবং দীর্ঘ সময় সুস্থ থাকার লক্ষ্যে মেসির ডায়েট ও রুটিন নিয়ে কৌতূহল এখন বিশ্বজুড়ে।
ইএসপিএন ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৩–১৪ বিশ্বকাপে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স না করতে পারার পর নিজের উন্নতিতে নতুন করে কাজ শুরু করেন মেসি। সবার আগে বদল আনেন ডায়েটে। আমেরিকার এক টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, ‘আমার মনে নেই তখন কী খেতাম। তবে বছরের পর বছর আমি অনেক খারাপ জিনিস খেতাম। ২২–২৩ বছর বয়সে আমি চকোলেট, কুকিজ, ঠান্ডা পানীয় খেতাম।’ এসব খাবারের কারণে তার দুর্বলতা, বমি ভাব ও আলসেমি লাগত বলেও জানান তিনি।
ডায়েটে এই বড় পরিবর্তনের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন পুষ্টিবিদ জিওলিয়ানো পোসার। ২০১৪ সালে তিনি মেসিকে নিয়ন্ত্রিত ও বাস্তবসম্মত ডায়েট অনুসরণের পরামর্শ দেন। ফ্যান্সি কোনো খাদ্যতালিকা নয়, বরং সহজ কিন্তু শৃঙ্খলাবদ্ধ খাবার গ্রহণের ওপর জোর দেন পোসার। সেখান থেকেই মেসির ডায়েটে যুক্ত হয় ‘ফাইভ পিলার রুল’—জল, অলিভ অয়েল, গোটা শস্য, ফল ও সবজি। মেসি নিজেই বলেন, ‘আমি এখন ভালো করে খাই। মাছ, মাংস, সবজি, স্যালাড খাই। মাঝে মাঝে ওয়াইন খাই, তবে সেটা নিয়ন্ত্রিত।’
মেসির ওয়ার্কআউট রুটিন
পেশিবহুল শরীর নয়, মেসির মতো খেলোয়াড়ের প্রয়োজন ফ্লেক্সিবল ও ব্যালান্সড বডি। সে কারণে তিনি খুব বেশি ওজন তোলার অনুশীলন করেন না। বরং স্ট্রেংথ ট্রেনিং, স্ট্রেচিং এবং পেশি সচল রাখার ব্যায়ামের দিকেই বেশি মনোযোগ দেন। এর পাশাপাশি স্পিড ট্রেনিং, স্প্রিন্ট ও হার্ডল অনুশীলনও তার রুটিনের অংশ।
দিনের শেষে বলা যায়, নিয়ন্ত্রিত ডায়েট ও শৃঙ্খলাবদ্ধ অনুশীলনের সমন্বয়েই ফিটনেসে বাজিমাত করছেন লিওনেল মেসি। অফ সিজ়নেও এই রুটিনে খুব একটা পরিবর্তন আসে না, আর সেটাই তাকে দীর্ঘ সময় ধরে বিশ্বের সেরাদের কাতারে ধরে রেখেছে।