মেসিবিহীন বিবর্ণ আর্জেন্টিনা
দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইপর্বে আগেই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচে লিওনেল মেসির সম্ভাব্য বিদায়ী আবহে ভেনেজুয়েলাকে হারিয়েছিল ৩-০ গোলে। তবে মেসিকে ছাড়া শেষ ম্যাচে আর জয়ের মুখ দেখা হলো না লিওনেল স্কালোনির দলের। ইকুয়েডরের মাঠে হেরে ফিরতে হয়েছে ১-০ গোলে।
বুধবার ভোরে গায়াকিলের এস্তাদিও মনুমেন্তালে শুরুটা ভালোই করেছিল সফরকারী আর্জেন্টিনা। কিন্তু ৩১ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় তারা। প্রায় একা গোলমুখে ছুটে যাচ্ছিলেন ইকুয়েডরের অধিনায়ক এনার ভ্যালেন্সিয়া। ফাউল করে তাকে থামাতে গিয়ে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন নিকোলাস ওতামেন্ডি। ১০ জনের দলে পরিণত হয় আর্জেন্টিনা।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আবারও বিপদে পড়ে আর্জেন্টিনা। নিকোলাস টালিয়াফিকোর ফাউল ভিএআরের পর্যালোচনায় ধরা পড়ে। বক্সের ভেতর ফাউলের জন্য পেনাল্টি দেন রেফারি। সেখান থেকে গোল করেন ভ্যালেন্সিয়া। নিজের ১০০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচে লা ত্রির জার্সিতে শেষ প্রতিযোগিতামূলক হোম ম্যাচে গোল করে নায়কে পরিণত হন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সমান সংখ্যক খেলোয়াড় নিয়ে মাঠে নামে দুই দল। নিকো গনসালেসকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন ইকুয়েডরের ময়েসেস কাইসেডো। এরপরও বল দখল আর ছন্দে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখে স্বাগতিকরা। আর্জেন্টিনা নামায় হুলিয়ান আলভারেস, ফ্রাঙ্কো মাস্তানুতো আর জিওভানি লো সেলসোকে। এর মধ্যে লো সেলসোর শট ডিফ্লেক্ট হয়ে বার ঘেঁষে বাইরে যায়। বাকি সময়ে ডিফেন্সে উইলিয়ান পাচো ও গোলরক্ষক হারনান গালিন্দেজ নিশ্চিত করেন, আর্জেন্টিনা যেন আর কোনোভাবে সমতা ফেরাতে না পারে।
মেসিকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল, আর নিষেধাজ্ঞার কারণে খেলতে পারেননি ক্রিস্টিয়ান রোমেরো। অন্যদিকে বিশ্বকাপের টিকিট আগেই নিশ্চিত করা ইকুয়েডরও চেয়েছিল নিজেদের মাঠে ভালোভাবে শেষ করতে। তাই ম্যাচের আগে মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে ভ্যালেন্সিয়াকে ঘিরে আবেগঘন মুহূর্ত তৈরি হয়। ভিডিও ট্রিবিউট আর করতালিতে ভাসান সমর্থকেরা।
শেষ দিকে উত্তপ্ত পরিবেশ, একের পর এক কার্ড—তবু শেষ হাসি হাসল স্বাগতিকরা। আর্জেন্টিনা বাছাই শেষ করেছে শীর্ষে থেকে, প্রভাবশালীভাবেই। আর ইকুয়েডরের জন্য এটি হয়ে থাকল অভিজ্ঞ ভ্যালেন্সিয়াকে ঘিরে এক আবেগঘন রাত এবং বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে স্মরণীয় জয়।