শীতে লবঙ্গ-চা কেন খাবেন, কী কী উপকার পাবেন
অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতে সাধারণত চায়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ে। দুধ, চিনি ছাড়া চায়ে চুমুক দিতে আর ভালো লাগে না। অন্যরকম চায়ে চুমুক দেওয়ার জন্য শীতের সময়ে অনেকেই লবঙ্গ চা খেতে পছন্দ করেন। পুষ্টিবিদরাও শীতের সময়ে লবঙ্গ চা খাওয়ার পরামর্শ দেন।
তাদের মতে, লবঙ্গে রয়েছে ইউজেনল নামের শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া সর্দিকাশি, ঠান্ডা লাগা, পেটফাঁপার মতো বহু সমস্যার ঘরোয়া সমাধান হিসেবে কাজ করে লবঙ্গ চা। চলুন জেনে নিই লবঙ্গ চা খেলে যেসব উপকার পাওয়া যায়—
রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি
লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে টক্সিন মুক্ত রাখে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।
হজমে সহায়ক
লবঙ্গ চা হজমশক্তি বাড়ায়। শীতে খাবার হজমে সমস্যা, অম্বল বা গ্যাস্ট্রিকের প্রবণতা বেড়ে যায় লবঙ্গ চা এসব সমস্যা দূর করতে ভূমিকা রাখে। এছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান মুখের ভিতরে থাকা জীবাণু ধ্বংসে সহায়তা করে, ফলে দাঁত ও মাড়িরও উপকার হয়।
ফুসফুসের স্বাস্থ্য
বুকে দীর্ঘ দিন ধরে জমে থাকা সর্দি পাতলা করতে সাহায্য করে লবঙ্গ -চা। নিয়মিত খেলে ফুসফুসে ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণও কমে।
ওজন কমায়
লবঙ্গ চা অন্ত্রের জন্য ভালো। বিপাকহার বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এই পানীয়। যা ওজন কমানোর জন্য জরুরি। এটি শরীরে পানি জমা কমাতেও এবং পেট ফাঁপা দূর করতেও সহায়তা করে, ফলে ওজন কমানোর রুটিনে এটি একটি ভালো সংযোজন হতে পারে।
প্রদাহ কমাতে
লবঙ্গে রয়েছে প্রদাহনাশক উপাদান, যা ইনফ্লেমেশন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে জয়েন্ট ব্যথা, পেশির টান বা ব্যথা, এমনকি আর্থ্রাইটিসের মতো সমস্যায়ও উপশম পেতে সাহায্য করতে পারে।
প্রাকৃতিকভাবে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে
লবঙ্গের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ব্যাক্টেরিয়া, ছত্রাক ও ভাইরাসজনিত সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে সর্দি-কাশি বা ইউটিআই-এর মতো সাধারণ সংক্রমণের ঝুঁকি কমতে পারে।
আরও পড়ুন : কমলালেবুর রসে কমবে উচ্চ রক্তচাপ, বদল জিন বিন্যাসেও—আরও যত উপকার
লিভারের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে
লবঙ্গ চায়ে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারকে ডিটক্স করতে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত পান করলে লিভারের কার্যকারিতা উন্নত হতে পারে এবং টক্সিন বা ফ্যাটি জমার কারণে হওয়া ক্ষতির হাত থেকেও সুরক্ষা দিতে পারে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
শীতের সময়ে চুপিসারে রক্তে শর্করা বাড়তে থাকে। লবঙ্গ দেওয়া চায়ে চুমুক দিলে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক থাকে। খাবার খাওয়ার পর চট করে সুগার স্পাইক বেড়ে যায় না। এই চা প্রিডায়াবেটিস বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য উপকারী হতে পারে (চিকিৎসকের পরামর্শ সাপেক্ষে)।
কী ভাবে বানাবেন লবঙ্গের চা?
পানি কিছুটা ফুটিয়ে নিন। ফুটন্ত পানিতে লবঙ্গ মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ফোটান। তার পর আঁচ বন্ধ করে, মুখ একটি পাত্র ঢাকা দিয়ে রেখে দিন আরও ৫ মিনিট। এর পর ছাঁকনির সাহায্যে ছেঁকে নিয়ে হালকা গরম থাকতে থাকতে এই পানীয় খান। চাইলে এর সঙ্গে লেবু এবং মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন।
সূত্র: এনডিটিভি