কিশমিশ ভেজানো পানি পানে পাবেন যে ৫ উপকার
বর্তমান ব্যস্ত জীবনে আমরা সবাই চাই সহজে স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য ধরে রাখতে। নানা ডিটক্স ড্রিংক, সাপ্লিমেন্ট আর ব্যয়বহুল স্কিনকেয়ার পণ্যের ভিড়ে কিশমিশ ভেজানো পানি হয়ে উঠছে এক প্রাকৃতিক ও সাশ্রয়ী বিকল্প। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস কিশমিশ পানি পান করলে শরীর ভেতর থেকে ডিটক্স হয়, ত্বক উজ্জ্বল হয়, চুল মজবুত থাকে, আর শক্তি ও মনোযোগ বাড়ে। আধুনিক জীবনযাপনের এই যুগে কিশমিশ পানি হয়ে উঠছে নতুন প্রজন্মের প্রাকৃতিক স্বাস্থ্য সৌন্দর্য টনিক। চলুন দেখে নেওয়া যাক প্রতিদিন কিশমিশ পানি পানের পাঁচ উপকারিতা-
ত্বক পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করে
সুস্থ, উজ্জ্বল ত্বক শুরু হয় শরীরের ভেতর থেকে আর কিশমিশ পানি ঠিক সেটিই করে। এটি রক্ত পরিষ্কার করে এবং শরীর থেকে টক্সিন দূর করে। কিশমিশে আছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিশেষ করে পলিফেনল যা ত্বকের কোষকে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে ও অকাল বার্ধক্য রোধ করে।
রাতে ভিজিয়ে রাখলে কিশমিশের আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন সি পানিতে মিশে যায়। ফলে এটি হয়ে ওঠে এক প্রাকৃতিক ডিটক্স টনিক। সকালে খালি পেটে পান করলে এটি যকৃত পরিষ্কার করে, হজমে সাহায্য করে এবং ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে তোলে। নিয়মিত পান করলে ব্রণ, দাগ-ছোপ ও প্রদাহ কমে গিয়ে ত্বক হয়ে ওঠে মসৃণ ও উজ্জ্বল একদম প্রাকৃতিক গ্লো ড্রিংক।
চুলকে করে শক্ত, ঘন ও উজ্জ্বল
কিশমিশে আছে প্রচুর আয়রন, পটাশিয়াম ও বি-ভিটামিন যা মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় ও নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। আয়রন চুলের গোড়ায় পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ করে, ফলে চুল হয় শক্ত ও মজবুত। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস কিশমিশ পানি পান করলে ভিতর থেকে চুলের গোঁড়া শক্ত হয়। যা দামি সিরামের বিকল্প হিসেবে কাজ করে।
অকাল বার্ধক্য রোধ করে ও কোলাজেন বাড়ায়
যৌবন ধরে রাখতে কে না চায়? কিশমিশ পানিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রেসভারাট্রল কোষের ক্ষতি রোধ করে, ত্বকে বলিরেখা ও সূক্ষ্ম দাগের গঠন বিলম্বিত করে। এটি কোলাজেন উৎপাদন বাড়িয়ে ত্বককে টানটান ও কোমল রাখে। কিশমিশ পানি নিয়মিত পান করলে এটি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখে, কালচে দাগ ও চোখের নিচের ফোলাভাব কমায়।
হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে ও পিরিয়ডের আগে ব্রণ কমায়
এটি হরমোনের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। বিশেষ করে মাসিকের সময়। কিশমিশে থাকা প্রাকৃতিক চিনি, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম মানসিক চাপ ও মুড পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে রাখে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে হরমোনজনিত ব্রণ প্রতিরোধ করে। আয়ুর্বেদ মতে, কিশমিশ পানি নিয়মিত পান করলে ক্লান্তি, মানসিক অস্থিরতা ও অনিয়মিত মাসিকের সমস্যা কমে। হরমোন ঠিক থাকলে ত্বকও থাকে সুন্দর, ব্রণ ও ফোলাভাব কমে যায়, ত্বকে আসে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা।
শরীরকে হাইড্রেট ও ডিটক্সিফাই করে
ত্বকের সৌন্দর্যের জন্য পর্যাপ্ত পানীয় গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। কিশমিশ পানি কেবল শরীরকে হাইড্রেট করে না এটি সরবরাহ করে প্রয়োজনীয় ইলেকট্রোলাইট ও পুষ্টি উপাদান, যা সাধারণ পানি দিতে পারে না। কিশমিশের প্রাকৃতিক চিনি দ্রুত শক্তি দেয় আর পটাশিয়াম শরীরের পানির ভারসাম্য ঠিক রাখে। এটি ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে, শুষ্কতা প্রতিরোধ করে এবং ত্বককে করে তোলে উজ্জ্বল ও তরতাজা। একই সঙ্গে যকৃত পরিষ্কার ও শরীরের টক্সিন দূর করে ত্বককে দেয় প্রাকৃতিক দীপ্তি।
যেভাবে প্রস্তুত করবেন
কিশমিশ ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
রাতে ২ কাপ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
সকালে পানি ছেঁকে খালি পেটে পান করুন।
চাইলে ভেজানো কিশমিশও খেতে পারেন এতে বাড়তি ফাইবার ও পুষ্টি পাবেন।
সেরা ফল পেতে একটানা ৩–৪ সপ্তাহ নিয়মিত পান করুন।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া